বারকোড

আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩:৫৮ পিএম
নামান্তরে:
বার কোড
বারকোড

বারকোড: তথ্যের দৃশ্যমান ও যন্ত্র-পাঠযোগ্য উপস্থাপনা

আমাদের আধুনিক জীবনে বারকোড একটি অতি পরিচিত ও গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি। কিন্তু কী এই বারকোড? কীভাবে এটি কাজ করে? এই নিবন্ধে আমরা বারকোডের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করব।

বারকোডের সংজ্ঞা:

বারকোড হলো তথ্যের একটি দৃশ্যমান ও যন্ত্র-পাঠযোগ্য উপস্থাপনা। এটি বিভিন্ন সমান্তরাল রেখার ব্যবহার করে তৈরি হয়, যেখানে রেখাগুলির প্রস্থ ও মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গার পার্থক্য তথ্যের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রাথমিকভাবে রৈখিক (একমাত্রিক) বারকোড ব্যবহার করা হত, কিন্তু পরবর্তীতে দ্বিমাত্রিক বারকোডও ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই দ্বিমাত্রিক বারকোড (যেমন QR কোড) বর্গক্ষেত্র, বিন্দু, আয়তক্ষেত্র ইত্যাদি জ্যামিতিক আকারের ব্যবহার করে অনেক বেশি তথ্য ধারণ করতে পারে।

বারকোডের ইতিহাস:

নরমান জোসেফ উডল্যান্ড এবং বার্নার্ড সিলভার বারকোড আবিষ্কার করেন। ১৯৫১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এর জন্য পেটেন্ট (US2612994A) হয়। এই আবিষ্কার মোর্স কোডের উপর ভিত্তি করে হয়েছিল। তবে বাণিজ্যিক সাফল্যে পৌঁছাতে বারকোডের ক্ষেত্রে ২০ বছরেরও বেশি সময় লেগেছিল। ১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে আমেরিকান রেলপথ অ্যাসোসিয়েশন শিল্প ক্ষেত্রে বারকোড ব্যবহারের জন্য উদ্যোগ নেয়। জেনারেল টেলিফোন ও ইলেক্ট্রনিক্স এবং কারট্রাক এসিআই এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করে।

বারকোডের বাণিজ্যিক সাফল্য:

বারকোড সুপারমার্কেটের স্বয়ংক্রিয় চেকআউট সিস্টেমে ব্যবহার শুরু হওয়ার পরে বাণিজ্যিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৯৭৪ সালে রাইগলি কোম্পানির চুইংগামের প্যাকেটে সর্বজনীন পণ্য নম্বর (UPC) সহ বারকোডের প্রথম ব্যবহার দেখা যায়। বর্তমানে, QR কোড নামক দ্বিমাত্রিক বারকোড অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

বারকোডের ব্যবহার:

বারকোডের ব্যবহার ব্যাপক। এটি পণ্য শনাক্তকরণ, স্টক ম্যানেজমেন্ট, চেকআউট সিস্টেম, প্যাকেজ ট্র্যাকিং, পরিচয় নির্ণয় (যেমন হাসপাতালে রোগীর পরিচয়), স্বাস্থ্যসেবা, পরিবহন, অটোমোবাইল ইত্যাদি ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত হয়।

বারকোডের প্রকারভেদ:

বারকোড প্রধানত দুই প্রকার:

  • রৈখিক (১D) বারকোড: এগুলিতে তথ্য সমান্তরাল রেখার প্রস্থ ও ব্যবধানের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
  • দ্বিমাত্রিক (২D) বারকোড: এগুলিতে বর্গক্ষেত্র, বিন্দু আয়তক্ষেত্র ইত্যাদি জ্যামিতিক আকার ব্যবহার করা হয় এবং এগুলিতে রৈখিক বারকোডের চেয়ে অনেক বেশি তথ্য ধারণ করা যায়।

বারকোড পড়ার পদ্ধতি:

প্রাথমিকভাবে বারকোড স্ক্যানারের মাধ্যমে বারকোড পড়া হত। কিন্তু বর্তমানে স্মার্টফোনের ক্যামেরা এবং বিশেষ অ্যাপস ব্যবহার করেও এটি পড়া যায়।

বারকোডের গুরুত্ব:

বারকোড তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনার জন্য সহজ, দ্রুত ও কার্যকর একটি পদ্ধতি। এটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে।

মূল তথ্যাবলী:

  • বারকোড হল তথ্যের একটি দৃশ্যমান ও যন্ত্র-পাঠযোগ্য উপস্থাপনা।
  • নরমান জোসেফ উডল্যান্ড এবং বার্নার্ড সিলভার বারকোড আবিষ্কার করেন।
  • বারকোড রৈখিক ও দ্বিমাত্রিক দুই প্রকারের হয়।
  • বারকোড পণ্য শনাক্তকরণ, স্টক ম্যানেজমেন্ট, প্যাকেজ ট্র্যাকিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
  • স্মার্টফোন ও বিশেষ অ্যাপস ব্যবহার করে বারকোড পড়া যায়।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।