বরুড়া: কুমিল্লা জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও পৌরসভা
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলা একটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ অঞ্চল। প্রশাসনিকভাবে বরুড়া উপজেলার সদর এই শহরটি। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বরুড়ার জনসংখ্যা প্রায় ৪৯,১২৬ জন। এই উপজেলার অবস্থান ২৩°২২′৩৮″ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°০৩′১৮″ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর গড় উচ্চতা ১৩.১৫ মিটার।
ঐতিহাসিক দিক থেকে, বরুড়ার উল্লেখযোগ্য স্থান হল আদিনামুড়ার মসজিদ ও মাযার, চন্ডীমাতার মন্দির এবং মইর দীঘি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বরুড়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ২ সেপ্টেম্বর পাকবাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়েছিল এই উপজেলা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তীব্র সংঘর্ষ হয়েছিল পয়ালগাছার বটতলীতে।
বরুড়ার অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। ধান, আলু, গম, সরিষা, পান ইত্যাদি প্রধান ফসল। তাছাড়াও মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে। উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত; পাকা ও আধা-পাকা রাস্তা, রেলপথ, এবং ব্রিজ ও কালভার্ট রয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে বরুড়ায় কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে।
বরুড়া উপজেলার প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিও রয়েছে, বিশেষ করে বন্যা এবং ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে। এনজিও গুলি যেমন ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, ইত্যাদি এখানে উন্নয়নমূলক কাজ করে। সামগ্রিকভাবে, বরুড়া কুমিল্লার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা, যা ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে গুরুত্ব বহন করে।