বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর: বাংলাদেশের ঐতিহ্যের অভিভাবক
বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় সংস্থা যা দেশের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনাবলীর সংরক্ষণ, সংস্কার এবং গবেষণার কাজে নিয়োজিত। ১৮৬১ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে 'আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া'র অংশ হিসেবে যাত্রা শুরু করে এই প্রতিষ্ঠানটি। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর 'প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর অধিদপ্তর' নামে পুনর্গঠিত হয় এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর 'প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর অধিদপ্তর' নামে কার্যক্রম চালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে এর নামকরণ করা হয় 'প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর'। বর্তমানে ২০০৫ সাল থেকে ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত সদর দপ্তর থেকে কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
অধিদপ্তরের কার্যক্রম:
- প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান ও নিদর্শনাবলীর সনাক্তকরণ ও তালিকাভুক্তকরণ
- প্রত্নস্থলের সংরক্ষণ ও সংস্কার
- উৎখনন ও গবেষণা কাজ
- প্রত্নবস্তুর সংগ্রহ ও সংরক্ষণ
- জাদুঘর পরিচালনা ও উন্নয়ন
- জনসচেতনতা বৃদ্ধি
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ:
- কিউ এম মনির (প্রথম পরিচালক)
- মৌলভী সামসুদ্দীন আহম্মদ
- স্যার মর্টিমার হুইলার (উপদেষ্টা)
- রাউল কিউরিয়েল
- এফ.এ. খান
- নাজিমুদ্দীন আহম্মদ
- শফিকুল আলম (প্রথম মহাপরিচালক)
উল্লেখযোগ্য স্থান:
- মহাস্থানগড়
- ময়নামতি
- পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার
- ষাট গম্বুজ মসজিদ
- লালবাগ দুর্গ
- বাগেরহাট
- কুমিল্লা
- রাজশাহী
- বগুড়া
উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান:
বর্তমানে অধিদপ্তরের অধীনে ৫২৪ টির বেশি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি রয়েছে এবং ২০ টির বেশি জাদুঘর রয়েছে।
সাম্প্রতিক কার্যক্রম:
অধিদপ্তর নিয়মিতভাবে নতুন প্রত্নস্থল অন্বেষণ, ঐতিহাসিক স্থাপত্যের সংস্কার ও সংরক্ষণ, প্রত্নবস্তু সংগ্রহ, জাদুঘরের উন্নয়ন এবং গবেষণার কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথেও যৌথভাবে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর দেশের ঐতিহাসিক ঐতিহ্য রক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এ কাজ অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যায়।