পেয়ারা

আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ৫:২১ পিএম
নামান্তরে:
Guava
Guava friut
Psidium
Guayaba
Guava juice
Guavas
Bayaba
Amrood
Peyara
পেয়ারাফুল
পেয়ারা

পেয়ারা (Guava): বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি ফল। Psidium গণভুক্ত, প্রায় ১৫০ প্রজাতি থাকলেও Psidium guajava প্রজাতিটি বেশি চাষ হয়। আমেরিকার নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে উৎপত্তি, পেরু থেকে মেক্সিকো পর্যন্ত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ভারত, মেক্সিকো, ব্রাজিল, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, বাংলাদেশ, বার্মা, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, হাওয়াই, ফিলিপাইন, ফ্লোরিডা প্রভৃতি দেশে ব্যাপক চাষ হয়। ২৩-২৮° সেলসিয়াস তাপমাত্রা আদর্শ, তবে পরিণত গাছ ৪৫° সেলসিয়াসেও টিকে থাকে।

পেয়ারা ভিটামিন সি ও পেকটিনের উৎস। ৮০-৮৩% পানি, ২.৪৫% অম্ল, ৩.৫০-৪.৪৫% বিজারিত চিনি, ৩.৯৭-৫.২৩% অবিজারিত চিনি, ৯.৭৩% দ্রবণীয় শুষ্ক পদার্থ, ০.৪৮% পটাশিয়াম, ২৬০ মিগ্রা/১০০ গ্রাম ভিটামিন সি থাকে (মৌসুম, পরিপক্কতা ও জাতভেদে পরিবর্তনশীল)। কাঁচা ও পাকা অবস্থায় খাওয়া যায়। সালাদ, পুডিং, জেলি, শরবত, পাউডার, আচার, আইসক্রীম ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

গাছ ছোট থেকে মাঝারি (২.৩-১০ মি) আকারের। শিকড় মাটিতে গভীরে যায় না। পাতার কক্ষ থেকে পুস্পমুকুল একক বা পুষ্পমঞ্জুরীতে উৎপন্ন হয়। উৎপাদন মৌসুমে ২৫-৪৫ দিন ফুল ফোটে। উভয়লিঙ্গী ফুল বায়ু ও কীটপতঙ্গ দ্বারা পরাগায়ন হয়। উৎপাদিত ফুলের ৮০-৮৬% ফলে পরিণত হয়, কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে ঝরে পড়ে, ফলে ৫০-৬০% পরিপক্ক হয়। কাঁচা ফল সবুজ, পাকলে হালকা সবুজ বা হলুদাভ হয়।

তাপমাত্রা ফুল ধারণে প্রভাব ফেলে। অধিক তাপে ফুল ও ফল ঝরে যায়। শুষ্ক আবহাওয়া, হালকা রোদ ও ছায়াযুক্ত স্থান পেয়ারার জন্য ভালো। গ্রীষ্ম, বর্ষা ও শরৎ তিন ঋতুতে ফুল ফোটে। পরিমিত সার ও সেচে অমৌসুমেও ফলানো যায়। ১০০ সেমি বার্ষিক বৃষ্টিপাত আদর্শ। প্রায় সব ধরনের মাটিতে চাষ করা যায়, তবে সুনিষ্কাশিত ও জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ মাটি ভালো।

বংশবিস্তার যৌন ও অযৌন উভয় পদ্ধতিতে হয়। বীজ থেকে গাছের গুণাগুণ বজায় থাকে না এবং ফল ধরতে দেরি হয়। গুটি কলম, জোড় কলম, কুঁড়ি সংযোজন দ্বারা সহজেই বংশবিস্তার করা যায়। পলিথিন ব্যাগে চারা উৎপাদন ভালো।

বিভিন্ন জাত: কাজী পেয়ারা, স্বরূপকাঠি, কাঞ্চন নগর, বাউ পেয়ারা (১-৬), মুকন্দপুরী, আঙ্গুর, ইপসা পেয়ারা, বারি পেয়ারা (২ ও ৩), সৈয়দী, এলাহাবাদ, এল-৪৯, চেরী, কাশি ইত্যাদি।

চাষ: জমি তৈরি করে, বর্ষার পূর্বে চারা লাগানো হয়। গর্ত খনন, জৈব সার, ইউরিয়া, টিএসপি, এমপি সার প্রয়োগ। বর্ষাকাল রোপণের উপযুক্ত সময়। পলি ব্যাগের চারা সারা বছর লাগানো যায়। গাছ বড় হলে সারের পরিমাণ বাড়াতে হয়।

রোগবালাই: ছাতরা পোকা, হোয়াইট ফ্লাই, উইল্ট (নেতানো), এ্যানথ্রাকনোজ (ফোস্কা), কান্ডের ক্যাঙ্কার, পাতায় দাগ, ডগামরা, চারার ব্লাইট ইত্যাদি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

ফলন: পূর্ণ ফলবান হতে ৩/৪ বছর সময় লাগে। ফুল আসার ৪-৫ মাসে ফল সংগ্রহ। পচন রোধে ডাঁসা থাকতেই ফল সংগ্রহ উচিত। গাছের বয়স, মৌসুম, জাত, মাটি ও পরিচর্যা অনুযায়ী ফলন পরিবর্তিত হয়। একটি গাছ থেকে বছরে ৪০০-৮০০টি ফল, এবং এক হেক্টরে ২০-৩০ টন ফলন সম্ভব।

মূল তথ্যাবলী:

  • পেয়ারা বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ফল।
  • Psidium গণের প্রায় ১৫০ প্রজাতি রয়েছে।
  • আমেরিকার নিরক্ষীয় অঞ্চল পেয়ারার আদি জন্মস্থান।
  • পেয়ারায় প্রচুর ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ও ফাইবার আছে।
  • পেয়ারার বিভিন্ন জাতের চাষ হয় বাংলাদেশে।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - পেয়ারা

২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

শীতকালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য উপকারী ফল সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করেছে।

৩ জানুয়ারী ২০২৫

পেয়ারার পুষ্টিগুণ নিয়ে দৈনিক সিলেট ও যুগান্তরের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।