বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি): গ্রামীণ বাংলার আলোর পথপ্রদর্শক
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) হলো বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থা যা দেশের গ্রামীণ অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্ব পালন করে। ১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রপতির এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত এই বোর্ড ১৯৭৮ সাল থেকে কার্যক্রম শুরু করে। প্রাথমিকভাবে অত্যন্ত সীমিত পরিসরে কাজ শুরু করলেও বর্তমানে বিআরইবি দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। ঢাকায় অবস্থিত এর প্রধান কার্যালয় থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা এই সমিতিগুলি বিদ্যুৎ সরবরাহ, রক্ষণাবেক্ষণ ও বিল সংগ্রহের কাজ করে।
বিআরইবির প্রধান কার্যক্রম হলো গ্রামীণ অঞ্চলে বিদ্যুৎ লাইন ও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণ। এই বোর্ড গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, গ্রামকে শহরের সাথে সমতায় আনতে সাহায্য করে। ২০১১ সাল পর্যন্ত ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গঠন করে বিআরইবি এর কাজের পরিধি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সমিতিগুলি বিআরইবি'র তত্ত্বাবধানে কাজ করে এবং গ্রাহকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করে। বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া, লাইন ও উপকেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণ, গ্রাহকের অভিযোগ নিষ্পত্তি এবং বিল সংগ্রহ - এগুলিই তাদের প্রধান কাজ।
২০১৩ সালে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড আইন জারির মাধ্যমে বিআরইবি সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিতভাবে পরিচালিত হয়। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা মেনে বিআরইবি এবং এর অধীনস্থ সমিতিগুলো কাজ করে। বিআরইবি'র কর্মকর্তারা রাষ্ট্রীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন, অন্যদিকে সমিতির কর্মকর্তারা বিআরইবি নির্ধারিত বেতন স্কেল অনুসারে বেতন পান।
বর্তমানে, মেজর জেনারেল এস এম জিয়া-উল আজিম বিআরইবি'র চেয়ারম্যান। বিআরইবি বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলের উন্নয়নে অবদান রাখছে এবং আগামী দিনগুলিতে আরও ব্যাপকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।