নেত্রকোনা, দুর্গাপুর

আপডেট: ৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৫:৩৫ এএম
নামান্তরে:
নেত্রকোনা দুর্গাপুর
নেত্রকোনা, দুর্গাপুর

নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলা: ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও প্রকৃতির সমন্বয়

দুর্গাপুর উপজেলা, নেত্রকোণা জেলা, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রশাসনিক এলাকা। ২৭৯.২৮ বর্গ কিমি আয়তনের এ উপজেলা ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তবর্তী। গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য অপরিসীম। সোমেশ্বরী, কংস, পুরাতন সোমেশ্বরীসহ নানা নদ-নদী ও বিল-ঝিল দিয়ে এ উপজেলা পরিপূর্ণ।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব:

দুর্গাপুরের ইতিহাস প্রাচীনকালে বিস্তৃত। ১৮৭৪ সালে দুর্গাপুর থানা গঠিত হয় এবং ১৯৮২ সালে তা উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে হাজংদের হাতির খেদায় বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করানোর প্রতিবাদে হাজং নেতা মনা সর্দারের নেতৃত্বে হাজং বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। ১৯৪২-৪৩ সালে কমরেড মণি সিংহের নেতৃত্বে টংক আন্দোলন এবং ১৯৪৬-৪৭ সালে তেভাগা আন্দোলন এ উপজেলায় পরিচালিত হয়। মুক্তিযুদ্ধেও দুর্গাপুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গাঁওকান্দিয়া গ্রামের একটি ঘটনায় পাকসেনাদের হত্যার পর পাকবাহিনী গ্রামের প্রায় শতাধিক নিরীহ লোককে হত্যা করে। ফারাংপাড়া, বাদামবাড়ি, বিরিশিরি-বিজয়পুর সড়ক প্রভৃতি স্থানে মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধ হয়।

জনসংখ্যা ও সংস্কৃতি:

দুর্গাপুরের জনসংখ্যা প্রায় ২২৪৮৭৩। মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান এবং গারো ও হাজং আদিবাসী জনগোষ্ঠী এখানে বসবাস করে। উপজেলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সমৃদ্ধ। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, লাইব্রেরি, ক্লাব, নাট্যমঞ্চ, খেলার মাঠ ইত্যাদি এ উপজেলায় রয়েছে। বিরিশিরি উপজাতীয় কালচারাল একাডেমী উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান।

অর্থনীতি:

কৃষি দুর্গাপুরের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। ধান, পাট, গম, সরিষা, চিনাবাদাম, ভুট্টা, তুলা, শাকসবজি এখানকার প্রধান কৃষি ফসল। চিনামাটি, কাকর মাটি, নূড়ীপাথর, কয়লা এখানকার প্রাকৃতিক সম্পদ। বরফকল, আটাকল, স’মিল, ওয়েল্ডিং কারখানা, স্বর্ণশিল্প, মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প ইত্যাদি এখানকার শিল্প ও কুটিরশিল্প।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য:

শিক্ষার হার ৩৯.৫%। বিরিশিরি পিসিনল উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯২), বিরিশিরি মিশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৯) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, ক্লিনিক ইত্যাদি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

বিশেষ আকর্ষণ:

বিজয়পুর সাদা মাটির খনি, দুর্গাপুর শহীদ স্মৃতিসৌধ, রাশিমনি স্মৃতিসৌধ, রাণীখং ক্যাথলিক চার্চ, গারো ব্যাপ্টিস্ট কনভেনশন ক্যাম্পাস, মনসাপাড়া এডভেনটিস্ট ও সেমিনার উপজেলার বিশেষ আকর্ষণ। পরিবেশগতভাবে এ অঞ্চল অত্যন্ত সমৃদ্ধ।

নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলা

দুর্গাপুর উপজেলা নেত্রকোণা জেলার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত।

১৮৭৪ সালে থানা, ১৯৮২ সালে উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।

হাজং, টংক, তেভাগা আন্দোলনের ইতিহাস রয়েছে।

কৃষি ও প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভরশীল অর্থনীতি।

বিরিশিরি উপজাতীয় কালচারাল একাডেমী গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান।

নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলা - ঐতিহাসিক ঘটনা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল।

বিরিশিরি উপজাতীয় কালচারাল একাডেমী

মনা সর্দার, কমরেড মণি সিংহ

দুর্গাপুর, বিরিশিরি, বিজয়পুর, গাঁওকান্দিয়া, ফারাংপাড়া, বাদামবাড়ি, মাসকান্দা

নেত্রকোণা, দুর্গাপুর, উপজেলা, ঐতিহাসিক ঘটনা, সংস্কৃতি, প্রকৃতি, অর্থনীতি, ভারত সীমান্ত

মূল তথ্যাবলী:

  • দুর্গাপুর উপজেলা নেত্রকোণা জেলার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত।
  • ১৮৭৪ সালে থানা, ১৯৮২ সালে উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।
  • হাজং, টংক, তেভাগা আন্দোলনের ইতিহাস রয়েছে।
  • কৃষি ও প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভরশীল অর্থনীতি।
  • বিরিশিরি উপজাতীয় কালচারাল একাডেমী গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - নেত্রকোনা দুর্গাপুর

৪ জানুয়ারী ২০২৫

এই স্থানে হাজং সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী চরমাগা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।