নূরুল আমীন

নূরুল আমীন (১৮৯৩-১৯৭৪): পূর্ববাংলার রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহবাজপুরে জন্মগ্রহণ করা নূরুল আমীনের পৈতৃক নিবাস ছিল ময়মনসিংহের বাহাদুরপুরে। ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা লাভের পর তিনি আইনজীবী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। ১৯২৯ সালে ময়মনসিংহ লোকাল বোর্ডের সদস্য হিসেবে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত। পরবর্তীতে তিনি ময়মনসিংহ জেলা বোর্ডের সদস্য, পৌরসভার কমিশনার এবং দীর্ঘদিন জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। মুসলিম লীগের সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং ১৯৪৪ সালে তিনি বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৪৬ সালে বঙ্গীয় আইনসভার সদস্য ও স্পিকার নির্বাচিত হন। পাকিস্তান আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের পর, তিনি খাজা নাজিমুদ্দীনের মন্ত্রিসভায় বেসামরিক সরবরাহ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন এবং পাঁচ বছর এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। এ সময় তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলা আন্দোলনের বিরোধিতা করেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের কাছে পরাজিত হন। পরবর্তীতে তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে গঠিত এন.ডি.এফ.এর সাথে যুক্ত হন এবং আইয়ুব খানের শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নেন। ১৯৬৯ সালে তিনি পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) গঠন করেন। ১৯৭০ সালে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে পাকিস্তানের সাথে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেন এবং ১৯৭২ সালে পাকিস্তানের ভাইস-প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন। ১৯৭৪ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে তাঁর মৃত্যু হয়। নূরুল আমীনের রাজনৈতিক জীবন ছিল জটিল ও বিতর্কিত, যা পাকিস্তানের সৃষ্টি ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যাখ্যা করা যায়।

মূল তথ্যাবলী:

  • নূরুল আমীন ছিলেন পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
  • তিনি মুসলিম লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন।
  • ভাষা আন্দোলনের তিনি বিরোধিতা করেছিলেন।
  • মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন।
  • তিনি পাকিস্তানের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।