নীলকুঠি

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার খালিশপুরে অবস্থিত নীলকুঠি ব্রিটিশ শাসনামলের এক অন্ধকার অধ্যায়ের সাক্ষী। ১৭৫৭ সালের পলাশী যুদ্ধের পর ব্রিটিশরা বাংলায় নীল চাষের জন্য বিস্তৃতভাবে কুঠি নির্মাণ করে। এই নীলকুঠি ১৪ একর জমির উপর অবস্থিত এবং ১৮ শতকে নির্মিত বলে অনুমান করা হয়। মিস্টার ডেভরেল নামে একজন ব্রিটিশ সাহেব এই কুঠি থেকে নীল চাষ পরিচালনা করতেন এবং কৃষকদের নির্যাতন করার জন্যও কুঠির কিছু কক্ষ ব্যবহার করা হতো। ১৮১০ থেকে ১৮৫৮ সাল পর্যন্ত এই কুঠিতে নীল চাষ করা হয়েছিল। নীলকুঠির নিচ তলায় খাজনা আদায় এবং চাষীদের নির্যাতন করা হতো, আর উপর তলায় খাজনা আদায়কারীরা থাকত। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় নীলকুঠির মালিক জমিদার দেশ ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে, কুঠিটি সরকারি মালিকানাধীন হয় এবং মহাকুমা সিও অফিস এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। বর্তমানে এটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ঝিনাইদহ-যশোর অঞ্চলে ৬৭টি নীলকুঠি ছিল, যার অধিকাংশই ধ্বংস হয়ে গেছে। কৃত্রিম নীল আবিষ্কারের পর নীল ব্যবসায় মন্দা দেখা দেয় এবং ব্রিটিশরা তাদের কুঠিগুলো বিক্রি করে চলে যায়। খালিশপুর নীলকুঠি নীল চাষের শেষ দিকে নির্মিত হয়েছিল এবং পরে এক জমিদার কর্তৃক কাচারি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এই নীলকুঠির সংরক্ষণের জন্য পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ঝিনাইদহের মহেশপুরে অবস্থিত নীলকুঠি ব্রিটিশ শাসনামলের নিষ্ঠুরতা প্রতিফলিত করে।
  • ১৮ শতকে নির্মিত এই কুঠিটি ১৪ একর জমির উপর অবস্থিত।
  • মিস্টার ডেভরেল নীল চাষ পরিচালনা এবং কৃষক নির্যাতনে জড়িত ছিলেন।
  • ১৮১০-১৮৫৮ সাল পর্যন্ত এই কুঠিতে নীল চাষ হতো।
  • ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর কুঠিটি সরকারি মালিকানায় চলে আসে।
  • বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকা এই কুঠি সংরক্ষণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।