নাইকো দুর্নীতি মামলা: বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়
কানাডার একটি তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানী প্রতিষ্ঠান নাইকোর সাথে বাংলাদেশ সরকারের অস্বচ্ছ চুক্তির ফলে সৃষ্ট দুর্নীতির ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। ২০০৭ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক দায়ের করা এই মামলায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমানসহ অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তার নাম জড়িত।
তদন্তে উঠে এসেছে নাইকো বাংলাদেশের সাথে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির তথ্য। কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি) এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছাতক, ফেনী এবং কামতা গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলনের অনুমতি পাওয়ার জন্য নাইকো ব্যাপক দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছিল।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাইকোর প্রতিনিধি কাশেম শরীফ, শরফুদ্দিন আহমেদ, গিয়াস উদ্দিন আল মামুন এবং সেলিম ভুঁইয়া প্রভৃতি ব্যক্তি দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন। তারা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে ঘুষ প্রদান করেছিলেন। এই অর্থবিনিময়ে সরকারি কর্মকর্তারা নাইকোকে গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছিলেন।
মামলায় উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান, তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, তৎকালীন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, এবং আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ। এছাড়াও, অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের নামও জড়িত রয়েছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে যে, নাইকো বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্ট্রাটাম নামক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সুইস ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২০০৩ সালের ২১ অক্টোবর ২৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার জমা পড়ে এবং এরপর বেশ কিছু অ্যাকাউন্টে অর্থ স্থানান্তরিত হয়।
নাইকো দুর্নীতি মামলা বর্তমানে বিচারাধীন। আরো তথ্য পাওয়া গেলে আমরা এই প্রতিবেদন আপডেট করব।