নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা: ঐতিহাসিক ঐতিহ্য ও বর্তমান অগ্রযাত্রা
বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত নওগাঁ জেলার একটি প্রশাসনিক উপজেলা হলো মহাদেবপুর। বরেন্দ্র অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত এই উপজেলা ৩৯৭.৬৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের। ইতিহাসের গর্ভে সমৃদ্ধ এই অঞ্চল খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয়-চতুর্থ শতকে পুণ্ড্রনগর নামক সভ্যতার কেন্দ্রস্থল ছিল বলে ধারণা করা হয়।
ভৌগোলিক অবস্থান:
মহাদেবপুর উপজেলা ২৪˚৪৮' থেকে ২৫˚০১' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮˚৩৮' থেকে ৮৮˚৫৩' পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। এটি নওগাঁ জেলা সদর থেকে ২৪ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং ঢাকা থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। উত্তরে পত্নীতলা, দক্ষিণে মান্দা ও নওগাঁ সদর, পূর্বে বদলগাছী ও নওগাঁ সদর, এবং পশ্চিমে নিয়ামতপুর ও পোরশা উপজেলা অবস্থিত। আত্রাই নদী এই উপজেলায় প্রবাহিত হয়।
জনসংখ্যা ও জনগোষ্ঠী:
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, মহাদেবপুর উপজেলার জনসংখ্যা ছিল ২,৯২,৮৫৯ জন। এখানকার অধিবাসীদের বেশিরভাগই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আদিবাসী জনগোষ্ঠী বসবাস করে।
অর্থনীতি:
মহাদেবপুরের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। ধান, গম, আলু, আখ ইত্যাদি এখানকার প্রধান কৃষি ফসল। এছাড়াও বেশ কিছু চাউল কল, ভাটা, পেট্রল পাম্প, ইত্যাদি রয়েছে।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য:
শিক্ষার হার ৪৯.৮%। উপজেলায় ১২টি মহাবিদ্যালয়, ৪৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৭টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৮টি মাদ্রাসা এবং ৮৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের জন্য রয়েছে ১টি সরকারি হাসপাতাল এবং অন্যান্য ক্লিনিক।
প্রশাসন:
মহাদেবপুর থানা ১৮৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৪ সালে এটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে এটি ১০টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত।
ঐতিহাসিক ঘটনা:
মুক্তিযুদ্ধের সময় মহাদেবপুর ৭ নং সেক্টরের অধীনে ছিল। পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতার শিকার হয়েছিল এ অঞ্চল। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গণকবর ও বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে।
উল্লেখযোগ্য স্থান:
মহাদেবপুরে আদ্যাবাড়ী মন্দির, প্রাচীন বাসাবাড়ি ইত্যাদি ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে।
আমরা আশা করি এই তথ্য আপনার জন্য উপকারী হবে। ভবিষ্যতে আরও তথ্য উপলব্ধ হলে আমরা এই লেখাটি আপডেট করব।