দীঘাপতিয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা দয়ারাম রায় (১৬৮০-১৭৬০) একজন বিখ্যাত ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি প্রাথমিকভাবে নাটোরের মহারাজা রামজীবন রায়ের অধীনে কর্মচারী হিসেবে যোগদান করেন। তার কর্মদক্ষতা ও আন্তরিকতার জন্য তিনি দ্রুত দেওয়ান পদে উন্নীত হন এবং রাণী ভবানীর আমল পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন। দয়ারাম রায়ের রাজসরকারের কাছে বিশেষ সম্মান ও প্রতিপত্তি ছিল এবং মুর্শিদাবাদের নবাব সরকারের উপরও তার যথেষ্ট প্রভাব ছিল। যশোরের রাজা সীতারাম রায়কে বন্দী করার সময় মুর্শিদ কুলি খাঁকে সাহায্য করার জন্য তিনি ‘রায় রাইয়ান’ উপাধি লাভ করেন। নাটোরের মহারাজ রামকৃষ্ণ রায় রাজস্ব দায়ের কারণে জমিদারি বিক্রি করতে বাধ্য হলে, দয়ারাম রায় সাহ-উজিয়াল প্রভৃতি পরগণা কিনে নিয়ে দীঘাপতিয়া রাজবংশের স্থাপনা করেন। তিনি সংস্কৃত ভাষার অনুরাগী ছিলেন এবং রাজশাহীতে একটি চতুষ্পাঠী ও রাজবাড়িতে একটি মঠ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি প্রজাপ্রিয় শাসক ছিলেন এবং জনকল্যাণে অনেক কাজ করেছেন। দয়ারাম রায়ের পর তার পুত্র জগন্নাথ রায় এবং তারপর জগন্নাথের পুত্র প্রাণনাথ রায় দীঘাপতিয়া রাজবংশের উত্তরাধিকারী হন। প্রাণনাথ রায়ের কোনো সন্তান না থাকায় তিনি প্রসন্ননাথ রায়কে দত্তক নেন এবং সমস্ত সম্পত্তি তাকে দান করেন। প্রসন্ননাথ রায় পরবর্তীকালে রাজাবাহাদুর উপাধি লাভ করেন এবং দীঘাপতিয়ায় একটি ইংরেজি বিদ্যালয় এবং নাটোর ও বোয়ালিয়াতে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর প্রসন্ননাথের পোষ্যপুত্র প্রথমনাথ রায় দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রথমনাথ রায়ও জনকল্যাণে অবদান রাখেন এবং রায়বাহাদুর উপাধি লাভ করেন। তারপর প্রমথনাথ রায় এবং তার পুত্র প্রমদানাথ রায় দীঘাপতিয়া রাজবংশের শাসন পরিচালনা করেন। প্রমদানাথ রায় রাজা উপাধি লাভ করেন এবং রাজশাহী কলেজে ছাত্রাবাস নির্মাণ, বৃত্তি প্রবর্তন এবং রেশম শিল্পের উন্নয়নে অবদান রাখেন। দীঘাপতিয়া রাজবংশ বহু বছর ধরে নাটোর অঞ্চলে শাসন করেছে এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি ও জনকল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দয়ারাম রায়ের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপলব্ধ হলে আমরা এই লেখাটি আরও সমৃদ্ধ করব।
দয়ারাম রায়
আপডেট: ২ জানুয়ারী ২০২৫, ৭:০৮ এএম
মূল তথ্যাবলী:
- দীঘাপতিয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন দয়ারাম রায়।
- নাটোর রাজবংশের দেওয়ান ছিলেন দয়ারাম রায়।
- তিনি ‘রায় রাইয়ান’ উপাধি লাভ করেছিলেন।
- তিনি রাজশাহীতে একটি চতুষ্পাঠী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
- তিনি প্রজাকল্যাণে অবদান রেখেছিলেন।
একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।