দাগনভূঞা: ফেনী জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী জেলার অন্তর্গত দাগনভূঞা উপজেলার সদর দফতর হল দাগনভূঞা শহর। ১৩.৬৯ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই শহরটি ৩৩,৫৭৪ জন মানুষের বাসস্থান (২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী)। ফেনী জেলার তৃতীয় বৃহত্তম শহর হিসেবে দাগনভূঞা পৌরসভা দ্বারা শাসিত হয়।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
দাগনভূঞার পূর্ব নাম ছিল গোপীগঞ্জ/গুপিগঞ্জ, যা ভুলুয়া রাজ্যের অধীনে ছিল। জমিদার শ্রী অরুণ সিং বাহাদুরের স্ত্রী শ্রী গোপীদেবীর নামানুসারে এই নামকরণ হয় বলে ধারণা করা হয়। জমির আহমেদ-এর মতে, মুঘল আমলে শাহাজাদা সুজার সময় দুই বিশিষ্ট ব্যক্তি মাতুভূঁঞা ও দাগনভূঁঞা ফেনীর পশ্চিমাঞ্চলে বসতি স্থাপন করেন। দাগনভূঁঞার নামানুসারেই এলাকাটির নামকরণ হয়। ১৮৭৬ সালে বৃহত্তর নোয়াখালীর অংশ হিসেবে ফেনী মহকুমার অন্তর্গত ছিল দাগনভূঞা। ১৯৭৯ সালে থানা, ১৯৮৩ সালে উপজেলা এবং ২০০০ সালে পৌরসভায় উন্নীত হয়।
ভৌগোলিক অবস্থান ও সংস্কৃতি:
দাগনভূঞার ভৌগোলিক অবস্থান ও ভূ-প্রকৃতি এর সংস্কৃতিতে প্রভাব ফেলেছে। কথ্য ভাষায় কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা যায়, যেমন মহাপ্রাণধ্বনি অনেকাংশে অনুপস্থিত। আঞ্চলিক ভাষা মূলত নোয়াখালী উপভাষার অন্তর্ভুক্ত, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ভাষার সাথে মিল রয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন প্রাচীন সভ্যতার ইঙ্গিত দেয়।
প্রশাসন:
দাগনভূঞা পৌরসভা ৯টি ওয়ার্ড ও ২০টি মহল্লায় বিভক্ত। ১৩.৬৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের মধ্যে ১২.৭৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকা পৌরসভা দ্বারা শাসিত হয়।
অবস্থান ও জনসংখ্যা:
দাগনভূঞার অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ: ২২°৫৪′৪৬″ উত্তর ৯১°১৯′০৫″ পূর্ব। সমুদ্র সমতল থেকে গড় উচ্চতা ৩ মিটার। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মোট জনসংখ্যা ৩৩,৫৭৪ জন (পুরুষ ১৬,৮১৪, নারী ১৬,৭৬০)।