প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই): বাংলাদেশের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা
বাংলাদেশের প্রধান সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে পরিচিত প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই) বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৭২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে 'ডিরেক্টরেট অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স' (ডিএফআই) নামে প্রতিষ্ঠিত হয় এই সংস্থা। পরবর্তীতে ১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে এর নাম পরিবর্তন করে বর্তমান নামকরণ করা হয়। ১৯৯৪ সালের ৮ই মার্চ সংস্থার নতুন অর্গানোগ্রাম প্রণয়ন করা হয়।
ডিজিএফআই-এর নেতৃত্বে থাকেন একজন মহাপরিচালক, যিনি সাধারণত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন মেজর জেনারেল (দ্বি-তারকা জেনারেল)। তিনি সাতজন উপ-মহাপরিচালকের মাধ্যমে সংস্থার কার্যক্রম পরিচালনা করেন। মেজর জেনারেল মোঃ ফয়জুর রহমান বর্তমানে এই সংস্থার মহাপরিচালক।
ডিজিএফআই বিদেশী গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে সহায়তা করে। এছাড়াও, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই), বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-এর সাথে মিলে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে কাজ করে।
ডিজিএফআই-এর অধীনে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (সিটিআইবি) একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট। ২০০২ সালে ডিজিএফআই-এর কাউন্টার টেরোরিজম শাখা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০০৬ সালে র্যাব ও এনএসআই-এর সাথে মিলে সিটিআইবি গঠন করা হয়। এই ব্যুরো অভ্যন্তরীণ হুমকি ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সিটিআইবি-এর এজেন্টরা সশস্ত্র বাহিনী থেকে নিয়োগ পান এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও বিশেষ অভিযান পরিচালনার জন্য দায়ী।
ডিজিএফআই-এর প্রধান কার্যালয় ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থিত। এই সংস্থা বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং গোপনীয়ভাবে কাজ করে।