চিকিৎসক: মানবতার সেবায় নিবেদিত প্রাণ
চিকিৎসক, একজন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী, যার পেশা মানুষের শারীরিক ও মানসিক রোগ, আঘাত, ও বিকার নিরীক্ষণ, নির্ণয় ও নিরাময়ে নিবেদিত। চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা ইবনে সিনার মতো মহান ব্যক্তিদের অবদানের ফলেই সম্ভব হয়েছে। তাঁর লেখা গ্রন্থাবলী আজও চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
চিকিৎসকদের দুটি প্রধান শ্রেণী আছে: প্রাথমিক সেবা প্রদানকারী ও বিশেষজ্ঞ। প্রাথমিক সেবা প্রদানকারী চিকিৎসকরা সাধারণ চিকিৎসা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ও বিশেষজ্ঞের কাছে রেফারাল দিয়ে থাকেন। বিশেষজ্ঞরা নির্দিষ্ট রোগ বা অঙ্গের উপর বিশেষজ্ঞতা অর্জন করে থাকেন, যেমনঃ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ইত্যাদি। পারিবারিক চিকিৎসক, অন্তরঙ্গ রোগ বিশেষজ্ঞ, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, জরারোগ বিশেষজ্ঞ প্রাথমিক সেবা প্রদানকারীদের উল্লেখযোগ্য অংশ।
একজন চিকিৎসাবিজ্ঞান শিক্ষার্থী চিকিৎসাশাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পর এক থেকে দুই বছরের ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করে নিবন্ধিত চিকিৎসক হিসেবে কাজ শুরু করেন। বিভিন্ন দেশে চিকিৎসা শিক্ষার সময়কাল ও নিবন্ধন প্রক্রিয়া ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, জার্মানি ইত্যাদি দেশে চিকিৎসা পেশায় নিয়ন্ত্রণ ও নিবন্ধন ব্যবস্থা বিদ্যমান। এছাড়াও আয়ুর্বেদ, ইউনানী ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতির চর্চাকারীরাও রয়েছেন। বিএইচএমএস, বিএএমএস, বিইউএমএস ডিগ্রী অর্জন করে তারা বৈধভাবে চিকিৎসা চর্চা করেন। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাও দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করছে।
চিকিৎসকদের পেশাগত দায়িত্ব ও নৈতিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোগীদের নিরাপত্তা ও সুস্থতা নিশ্চিত করা তাদের প্রধান দায়িত্ব। ২০০০ সালে রোগী-নিরাপদ আন্দোলন নামে এক সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চিকিৎসকদের কার্যকলাপ ও দক্ষতার নিয়মিত মূল্যায়ন করা হয়।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও চিকিৎসকদের অবদান মানবজাতির কল্যাণে অপরিসীম। তবে, চিকিৎসা সেবায় সর্বোত্তম মান বজায় রাখতে সর্বদা নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধ বজায় রাখা আবশ্যক।