টনসিল: রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ
মানবদেহের গলায় অবস্থিত টনসিল (Tonsils) হলো লিম্ফয়েড অঙ্গের একটি সেট যা ওয়ালডায়ারের টনসিলার রিং নামেও পরিচিত। এটি অনাক্রম্যতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কাজ করে। টনসিলের চারটি প্রধান ধরণ রয়েছে: ফ্যারিঞ্জিয়াল টনসিল (অ্যাডিনয়েড), দুটি টিউবাল টনসিল, দুটি প্যালাটাইন টনসিল এবং লিঙ্গুয়াল টনসিল। সাধারণত টনসিল বলা হলে প্যালাটাইন টনসিলকে বোঝায় যা গলার উভয় পাশে অবস্থিত।
বয়ঃসন্ধিতে প্যালাটাইন টনসিলের আকার সবচেয়ে বড় হয় এবং বয়সের সাথে সাথে ক্রমশ ছোট হতে থাকে। শিশুদের তুলনায় প্রাপ্তবয়স্কদের টনসিলের আকার ছোট। অ্যাডিনয়েড টনসিল ৫ বছর বয়স পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় এবং ৭ বছর বয়সে ক্রমশ ছোট হতে থাকে।
টনসিল শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রথম প্রতিরক্ষা লাইন হিসেবে কাজ করে। এটি বিভিন্ন রোগজীবাণুকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। টনসিলের পৃষ্ঠদেশে বিশেষ কোষ (M cells) থাকে যা রোগজীবাণু শনাক্ত করে এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে। ২০১২ সালের একটি গবেষণা দেখিয়েছে টনসিল থাইমাসের মতো নিজেই টি কোষ তৈরি করতে পারে।
টনসিল বড় (Adenotonsillar hyperplasia) বা প্রদাহিত (Tonsillitis) হতে পারে। টনসিলাইটিসের চিকিৎসায় অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ (যেমন আইবুপ্রোফেন) এবং অ্যান্টিবায়োটিক (যেমন অ্যামোক্সিসিলিন, অ্যাজিথ্রোমাইসিন) ব্যবহার করা হয়। যদি টনসিল শ্বাসনালীতে বাধা দেয়, তাহলে টনসিলিক্টমি (শল্যচিকিৎসা) করা যেতে পারে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে অসমমিত টনসিল লিম্ফোমা বা ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
টনসিলোলিথ (Tonsilolith), বা টনসিল পাথর, প্যালাটাইন টনসিলের উপর জমে থাকা ক্যালসিয়াম ধারণকারী পদার্থ। এর গন্ধ অপ্রীতিকর।