জয়পুরহাট

জয়পুরহাট: রাজশাহী বিভাগের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ জেলা। প্রকৃতির কোলে অবস্থিত এই শহরটি কৃষি, পোল্ট্রি ও ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পের উপর নির্ভরশীল। জয়পুরহাট শুধুমাত্র একটি জেলা শহর নয়, এটি একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান। এটির অতীত ইতিহাসের সাক্ষী হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থাপনা, ঐতিহ্যবাহী মেলা, এবং সংস্কৃতি।

  • *ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা:** জয়পুরহাট ২৫°৬′১২″ উত্তর ৮৯°১′১৫″ পূর্ব অক্ষাংশে অবস্থিত। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, জয়পুরহাটের জনসংখ্যা ছিল ৬৯০৩৩ জন এবং ২০২২ সালে ৮৪৯১০ জন। শহরটির আয়তন ১৮.৫৫ বর্গকিলোমিটার।
  • *ঐতিহাসিক গুরুত্ব:** ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জয়পুরহাট ৭ নং সেক্টরের অধীনে ছিল। এখানে পাকবাহিনীর নৃশংস অত্যাচারের অনেক ঘটনা ঘটেছে, যেমন বড়াই-কাদিপুর গ্রামে ৩৭১ জন গ্রামবাসীর নৃশংস হত্যা। এছাড়াও, পাঁচবিবি বাজারে আক্রমণ এবং পাগলা দেওয়ান গ্রামে জুম্মার নামাজের সময় অনেক নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়।
  • *অর্থনীতি:** কৃষি, পোল্ট্রি ও ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প জয়পুরহাটের অর্থনীতির মূল ভিত্তি। জয়পুরহাটে একটি বৃহৎ চিনিকল রয়েছে।
  • *দর্শনীয় স্থান:** জয়পুরহাটের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে খঞ্জপুর খ্রিষ্টিয় মিশন, আছরাঙ্গা বিল, পাথরঘাটা এবং বিখ্যাত পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার (যা জয়পুরহাট থেকে ১৩.২ কিমি দূরে)।
  • *শিক্ষা ও সংস্কৃতি:** জয়পুরহাটে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলেজ, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা রয়েছে। এখানকার লোক সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বৈচিত্র্যময়। ভাওয়াইয়া, পল্লীগীতি, মারফতি, দেহাতত্ত্ব, জারি গান, মর্সিয়া এবং যাত্রাপালা জয়পুরহাটের সংস্কৃতির অংশ।

জয়পুরহাট, একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ জেলা শহর। এটি আগামী দিনে আরও উন্নত হবে এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • জয়পুরহাট রাজশাহী বিভাগের একটি ঐতিহাসিক জেলা।
  • মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
  • কৃষি, পোল্ট্রি ও ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পের উপর অর্থনীতি নির্ভরশীল।
  • ঐতিহাসিক মেলা ও দর্শনীয় স্থান রয়েছে।
  • সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক।