ঢাকা শহরের প্রাচীনতম কবরস্থানগুলির মধ্যে একটি হল জুরাইন কবরস্থান। ঢাকা শহরের গোড়াপত্তনের সময় থেকেই এটি পারিবারিক কবরস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। পরবর্তীতে ঢাকা পৌরসভা এবং এরপর ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এর দায়িত্ব নেয়। প্রতিষ্ঠাকাল নির্দিষ্টভাবে জানা যায় না।
জুরাইন কবরস্থানটি পোস্তগোলা বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার উত্তরে, শ্যামপুর থানা এলাকায় অবস্থিত। এর মোট আয়তন ১৭.২৬ একর, যার মধ্যে ১২ একর সাধারণ কবরস্থান এবং ৫.২৬ একর সংরক্ষিত। গুলিস্তান থেকে যাত্রাবাড়ী হয়ে পোস্তগোলা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে উত্তর দিকে ৪০০ গজ যেতেই জুরাইন কবরস্থান পাওয়া যায়। এছাড়াও নদীর ওপার কেরানীগঞ্জ ব্রিজ পার হয়েও জুরাইন কবরস্থানে যাওয়া যায়। এটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন - অঞ্চল ১ এর অন্তর্ভুক্ত।
কবরস্থানটি দুটি অংশে বিভক্ত: স্থায়ী (ক্রয়কৃত) এবং অস্থায়ী। অফিস অস্থায়ী কবরস্থানের গেটের বাম পাশে অবস্থিত। সাধারণ কবরগুলি সাধারণত ১ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়, পরে সেখানে নতুন কবর দেওয়া হয়। এখানে শহীদ নূর হোসেনের কবর রয়েছে। রানা প্লাজা ধসের শিকার অজ্ঞাত পরিচয়ের ২৯১ জনের লাশ এখানে দাফন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে অনেকের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।
বেওয়ারিশ লাশ এবং আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের লাশ এখানে দাফন করা হয়। জানাযার নামাজের সহিত লাশ কবরস্থানে দাফন করা হয়। কবরস্থানে একটি মসজিদ এবং ওযুখানাও রয়েছে। এখানে প্রতিদিন গড়ে ৯ টি লাশ দাফন করা হয়। বেওয়ারিশ বা আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের লাশ দাফনের খরচ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন বহন করে। স্থায়ী কবরের জায়গা ক্রয় করে কেউ নিজের ও পরিবারের সদস্যদের কবর দিতে পারেন। একজন মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনের জন্য ৮০০ থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। এছাড়া কর্মীদের ঐচ্ছিক বকশিস দিতে হয়।