জামাল ভূঁইয়া: বাংলাদেশের ফুটবলের এক আইকন
জামাল হ্যারিস ভূঁইয়া (জন্ম: ১০ এপ্রিল ১৯৯০) একজন বিশিষ্ট ডেনীয়-বাংলাদেশী পেশাদার ফুটবলার। তিনি বর্তমানে আর্জেন্টিনার তোর্নেও ফেদেরাল এ-এর ক্লাব সোল দে মায়োতে খেলেন এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। মূলত একজন রক্ষণাত্মক মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হলেও, প্রয়োজন অনুসারে কেন্দ্রীয় মধ্যমাঠেও খেলেন।
ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে জন্মগ্রহণকারী জামালের শৈশব কেটেছে প্র্যানপিতে। তার বাবা-মা ১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে বাংলাদেশ থেকে ডেনমার্কে চলে আসেন। তিনি ডেনীয় ক্লাব প্র্যানপির যুব পর্যায়ে খেলা শুরু করেন এবং পরবর্তীতে কোপেনহেগেনের যুব দলে খেলে দক্ষতা বিকাশে অবদান রাখেন। তার জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের ক্যারিয়ার শুরু হয় হেলেরপের হয়ে। তারপর বোল্ডক্লুবেন এবং আভেডোরের মতো ক্লাবে খেলার পর ২০১৪ সালে তিনি বাংলাদেশে ফিরে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে যোগদান করেন। শেখ জামালে তিনি লিগ শিরোপা সহ বেশ কিছু শিরোপা জয় করেন। এছাড়াও শেখ রাসেল, সাইফ, কলকাতা মোহামেডান (ধারে) এবং অন্যান্য ক্লাবে খেলেছেন। ২০২৩ সালে তিনি আর্জেন্টিনার সোল দে মায়োতে যোগদান করেন।
২০১৩ সালের ৩১শে আগস্ট নেপালের বিরুদ্ধে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক করেন জামাল। তিনি বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক দলেও খেলেছেন এবং ২০১৮ এশিয়ান গেমসে কাতারের বিরুদ্ধে গোল করে বাংলাদেশকে নকআউট পর্বে উঠতে সাহায্য করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং ৭৬টির বেশি ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারও জিতেছেন। জামালের ব্যক্তিগত জীবনেও অনেক চ্যালেঞ্জ ছিলো, যার মধ্যে ডেনমার্কে গ্যাং সংঘর্ষে গুরুতর আঘাত পাওয়া অন্যতম। এই ঘটনার পর, অনেক চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের পর তিনি ফুটবলে ফিরে আসেন।
জামাল ভূঁইয়া কেবলমাত্র একজন দক্ষ ফুটবলার নন, তিনি বাংলাদেশের ফুটবলের ইতিহাসে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তার দুর্দান্ত খেলা এবং নেতৃত্বের দক্ষতার জন্য তিনি বাংলাদেশী ফুটবল সমর্থকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়।