বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা: একটি গৌরবের প্রতীক
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, সবুজ পটভূমিতে লাল বৃত্ত, দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তির অম্লান প্রতীক। এই পতাকা কেবল একটি কাপড়ের টুকরো নয়, বরং এটি বাঙালি জাতির আত্মত্যাগ, সাহস, এবং অর্জিত স্বাধীনতার প্রতীক। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর, মুজিবনগর সরকার ১৭ এপ্রিল ১৯৭২ সালে পতাকাটি জাতীয় পতাকা হিসাবে গ্রহণ করে।
পতাকার নকশা:
পতাকাটি আয়তাকার, সবুজ রঙের, এর উচ্চতা ও দৈর্ঘ্যের অনুপাত ১০:৬। মাঝখানে একটি লাল বৃত্ত রয়েছে, যার ব্যাসার্ধ পতাকার দৈর্ঘ্যের এক-পঞ্চমাংশ। বৃত্তটির কেন্দ্রবিন্দু পতাকার উচ্চতার ৯/২০ অংশ থেকে টানা উল্লম্ব রেখা ও প্রস্থের মাঝখান দিয়ে টানা অনুভূমিক রেখার ছেদবিন্দুতে অবস্থিত। সবুজ রঙের কোড হল প্রুশিয়ান গাঢ় সবুজ (H-2 R.S, 50%) এবং লাল বৃত্তের রঙ প্রুশিয়ান উজ্জ্বল কমলা (H-2 R.S, 60%)।
পতাকা উত্তোলনের নিয়ম:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নিয়মাবলী রয়েছে পতাকা বিধি (১৯৭২) এর মধ্যে উল্লেখ করা আছে। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, ঈদ-ই-মিলাদুন্নবীসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে সরকারি ও বেসরকারি ভবনে পতাকা উত্তোলন করা হয়। একুশে ফেব্রুয়ারীতে পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন করা হয়। বিভিন্ন সরকারি ভবন, মন্ত্রণালয়, রাষ্ট্রপতি ভবন, প্রধানমন্ত্রী ভবন, জাতীয় সংসদ ভবন ইত্যাদিতে প্রতি কার্যদিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয়।
পতাকার ইতিহাস:
১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র নেতারা যে পতাকা উত্তোলন করেছিলেন, তার আদলেই মুজিবনগর সরকার জাতীয় পতাকার নমুনা নির্ধারণ করে। পতাকার প্রাথমিক নকশায় লাল বৃত্তের মধ্যে বাংলাদেশের মানচিত্র ছিল, যা পরবর্তীতে অপসারণ করা হয়।
জাতীয় পতাকার গুরুত্ব:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা জাতির আত্মসম্মান, ঐক্য, এবং স্বাধীনতার প্রতীক। এটি প্রত্যেক বাঙালির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং একে সম্মানের সাথে শ্রদ্ধা করা উচিত।