চুক্তি

চুক্তি: আইনের চোখে দুই বা ততোধিক পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক সম্মতি ও আইনগত বাধ্যবাধকতা সম্পন্ন একটি লিখিত বা মৌখিক সমঝোতা। একটি বৈধ চুক্তির জন্য প্রস্তাব, গ্রহণ, বিবেচনা (কনসিডারেশন), এবং পক্ষদের আইনগত যোগ্যতা অপরিহার্য। চুক্তি বিভিন্ন ধরণের হতে পারে, যেমন বিক্রয় চুক্তি, ভাড়া চুক্তি, কর্মসংস্থান চুক্তি, আন্তর্জাতিক চুক্তি ইত্যাদি। চুক্তি ভঙ্গের ফলে ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিধান থাকে।

ঐতিহাসিক চুক্তি: বাংলাদেশের ইতিহাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি রয়েছে। সিমলা চুক্তি (১৯৭২): ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তি। এতে যুদ্ধবন্দীদের বিনিময় ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বীকৃতি ছিল অন্যতম বৈশিষ্ট্য। স্থান: সিমলা, ভারত। ব্যক্তি: জুলফিকার আলী ভুট্টো, ইন্দিরা গান্ধী।

আলীনগর চুক্তি (১৭৫৭): ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি। এটি ব্রিটিশদের বাংলায় প্রভাব বিস্তারের পথ প্রশস্ত করেছিল। স্থান: কলকাতা (আলীনগর)। ব্যক্তি: সিরাজউদ্দৌলা, ক্লাইভ।

ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তি (১৯৭২): ২৫ বছর মেয়াদী এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে শান্তি ও সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত হয়। ব্যক্তি: ইন্দিরা গান্ধী, শেখ মুজিবুর রহমান।

উৎপাদন বন্টন চুক্তি (PSC): তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ও উন্নয়নের লক্ষ্যে বিদেশি কোম্পানি ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি। এতে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করে অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং উৎপাদিত তেল/গ্যাসের নির্দিষ্ট অংশ সরকারকে প্রদান করে। সংগঠন: পেট্রোবাংলা।

চুক্তি আইন (১৮৭২): বাংলাদেশে চুক্তির সাধারণ নীতিমালা ও বিভিন্ন ধরনের চুক্তির বিধান সম্বলিত আইন।

মূল তথ্যাবলী:

  • চুক্তি হলো আইনসম্মত বাধ্যবাধকতা সম্পন্ন দুই বা ততোধিক পক্ষের মধ্যকার সম্মতি।
  • বৈধ চুক্তির জন্য প্রস্তাব, গ্রহণ, বিবেচনা ও পক্ষের যোগ্যতা জরুরী।
  • সিমলা, আলীনগর ও ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তি বাংলাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ।
  • PSC চুক্তি বিদেশি কোম্পানি ও সরকারের মধ্যে তেল/গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য।
  • চুক্তি আইন ১৮৭২ চুক্তির সাধারণ নীতিমালা নির্ধারণ করে।