সিলেট নগরীর চালিবন্দর: ঐতিহ্য ও বর্তমানের সংযোগ
সিলেট নগরীর এক অতি প্রাচীন ও ঐতিহাসিক এলাকা হল চালিবন্দর। একসময় ব্যস্ততম এই এলাকা বর্তমানে নির্জনতার ছোঁয়ায় আচ্ছন্ন। অনেকের কাছে চালিবন্দর শুধু একটি সড়কের নাম হলেও, বাস্তবে এটি একটি ঐতিহাসিক এলাকা, যার সাথে জড়িত রয়েছে সিলেটের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক অনেক ঘটনা।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:
অম্বরীষ দত্ত নামক এক অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের ভাষ্যমতে, চালিবন্দর এলাকা সিলেট শহরের পুরোনো পাড়াগুলির অন্যতম। এর প্রধান সড়ক মেন্দিবাগ হয়ে টিলাগড় পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। সুলতানি আমলে গোয়ালি ছড়ার তীরে, হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্মশানের কাছে ইট-সুরকির একটি সেতু নির্মিত হয়, যা ‘শ্মশানের পুল’ নামে পরিচিত ছিল। পাকিস্তান আমলে এই সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়লে লোহার একটি ব্রিজ স্থাপন করা হয়, যা পরবর্তীতে নতুন করে পাকা সেতুতে রূপান্তরিত হয়। ১৯৮৩ সালে সুরমা নদীতে শাহজালাল সেতু নির্মাণের পর সোবহানীঘাট-উপশহর-মেন্দিবাগ হয়ে একটি নতুন সড়ক চালু হয়, যার ফলে চালিবন্দর সড়কের ব্যবহার অনেকটাই কমে যায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় কিনব্রিজ বিধ্বস্ত হলে মেন্দিবাগ এলাকায় ফেরিঘাট চালু হয় এবং চালিবন্দর সড়ক ট্রাক ও যানবাহনের জন্য ব্যস্ততম সড়ক হিসেবে পরিণত হয়।
বর্তমান অবস্থা:
আশির দশকে দিনরাত চালিবন্দর সড়ক ব্যস্ত থাকলেও বর্তমানে দিনের বেলায়ও এটি খুব একটা সরগরম থাকে না। সন্ধ্যার পর এটি প্রায় নির্জন হয়ে পড়ে। শ্মশানের পুলের চালিবন্দর অংশে বসতি স্থাপনের ফলে কিছু লোকজনের চলাচল আছে, কিন্তু মেন্দিবাগ অংশ অনেকটাই নির্জন। মেন্দিবাগ এলাকায় বেশ কিছু যানবাহন মেরামতের ওয়ার্কশপ রয়েছে যারা সন্ধ্যার পর দোকান বন্ধ করে চলে যায়।
চালিবন্দরের ঘটনা:
চালিবন্দরে বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে যেমন - আগুন লেগে গোডাউনে ১৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি, ক্রিকেট প্রিমিয়ার লীগের উদ্বোধন, এবং চালিবন্দর মহাশ্মশান ঘাটের আধুনিকায়ন কাজ। এই সকল ঘটনা চালিবন্দরের গুরুত্ব আরো বৃদ্ধি করে।
অন্যান্য তথ্য:
চালিবন্দরের সুনির্দিষ্ট জনসংখ্যা, ভৌগোলিক বিস্তৃতি ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য এই প্রতিবেদনে পাওয়া যায়নি। আমরা যত তথ্য পেয়েছি তা দিয়েই প্রবন্ধটি লিখেছি। আরও তথ্য পাওয়া গেলে তা যুক্ত করে এই প্রবন্ধটি আপডেট করা হবে।