চণ্ডীগড়: স্বাধীন ভারতের পরিকল্পিত সৌন্দর্য
চণ্ডীগড়, ভারতের একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, পাঞ্জাব ও হরিয়ানার যুগ্ম রাজধানী হিসেবে পরিচিত। শিবালিক পর্বতমালার পাদদেশে অবস্থিত এই শহরটি ১৯৫০ সালে পরিকল্পিতভাবে নির্মিত হয়। বিখ্যাত স্থপতি লে করবুসিয়ের নকশায় গড়ে ওঠা চণ্ডীগড় আধুনিক স্থাপত্য ও নগর পরিকল্পনার এক অনন্য নিদর্শন।
ঐতিহাসিক পটভূমি:
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর লাহোর পাকিস্তানে চলে যাওয়ায় পাঞ্জাবের নতুন রাজধানীর প্রয়োজন হয়। পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর স্বপ্নদর্শনের ফসল এই পরিকল্পিত শহর, যা ভারতের আধুনিকতার প্রতীক হিসেবে গড়ে ওঠে। প্রাথমিক পরিকল্পনাকারী আলবার্ট মেয়ার ও ম্যাথিউ নরউইকির মৃত্যুর পর লে করবুসিয়ে শহরটির পরিকল্পনা সম্পন্ন করেন।
ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা:
চণ্ডীগড় প্রায় ১১৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এখানে প্রায় ১০ লাখের অধিক মানুষ বাস করে, যাদের জীবনমান দেশের অন্যতম উচ্চ। হিন্দু, শিখ, মুসলিম ও খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এখানে বাস করে। হিন্দি ও পাঞ্জাবি শহরের প্রধান ভাষা।
অর্থনৈতিক গতিবিধি:
চণ্ডীগড়ের অর্থনীতি সরকারী কর্মচারী, শিক্ষা, আইটি এবং ছোটোখাটো শিল্পের উপর নির্ভরশীল। শহরে রয়েছে রাজীব গান্ধী চণ্ডীগড় প্রযুক্তি উদ্যান, যা আইটি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উচ্চ মাথাপিছু আয়ের কারণে চণ্ডীগড় দেশের সমৃদ্ধ শহরগুলির মধ্যে অন্যতম।
উল্লেখযোগ্য স্থান:
চণ্ডীগড়ে রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান। ক্যাপিটাল কমপ্লেক্স (সচিবালয়, বিধানসভা ও উচ্চ ন্যায়ালয়), সুখনা লেক, রক গার্ডেন, জাকির হুসেন রোজ গার্ডেন, পোস্ট গ্রাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (পিজিআইএমইআর)-এর মতো স্থানগুলি পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
চণ্ডীগড় একটি সুন্দর, সুসংগঠিত ও উন্নত পরিকল্পিত শহর যা ভারতের আধুনিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। এটি কেবল একটি শহর নয়, এটি ভারতের ইতিহাস ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।