গ্রোজনি

গ্রোজনি: রাশিয়ার চেচনিয়ার রাজধানী

গ্রোজনি (রুশ: Грозный; চেচেন: Соьлжа-ГӀала, প্রতিবর্ণীকরণ: Sölƶa-Ġala) রাশিয়ার চেচনিয়া প্রজাতন্ত্রের রাজধানী শহর। সুনজা নদীর তীরে অবস্থিত এই শহরটির ইতিহাস রাশিয়ার ককেশীয় অঞ্চল দখলের সঙ্গে জড়িত। ১৮১৮ সালে রাশিয়ান সেনাবাহিনী কর্তৃক গ্রোজনায়া নামে একটি দুর্গ স্থাপনের মাধ্যমে শহরের যাত্রা শুরু হয়। ১৮৭০ সালে এটি শহরের মর্যাদা লাভ করে এবং এর নামকরণ হয় গ্রোজনি (রুশ ভাষায় 'ভয়ঙ্কর' অর্থে)।

  • *ঐতিহাসিক ঘটনাাবলী:**

গ্রোজনি ককেশীয় যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দু ছিল। ২০শ শতকের প্রারম্ভে তেলের আবিষ্কার শহরের দ্রুত বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আলফ্রেড নোবেল এবং রোথসচাইল্ড পরিবারের সদস্যরা এ অঞ্চলের তেল শিল্পের উন্নয়নে অবদান রাখেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, গ্রোজনি জার্মানদের কাছে কৌশলগত লক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত ছিল।

সোভিয়েত যুগে, শহরটির উন্নয়ন অব্যাহত থাকে এবং স্ট্যালিন যুগের স্থাপত্যের প্রভাব এখানে স্পষ্ট। তবে, ১৯৪৪ সালে চেচেন এবং ইঙ্গুশদের বর্বর নির্বাসনের ঘটনা এই শহরের ইতিহাসের কলঙ্কজনক অংশ হিসেবে বিদ্যমান। ১৯৫৭ সালে তাদের ফিরে আসার পর, জাতিগত উত্তেজনা ও সংঘাত বহুবার শহরটিকে আঘাত করেছে।

  • *চেচেন যুদ্ধের প্রভাব:**

১৯৯০ এর দশকের চেচেন যুদ্ধ গ্রোজনিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। প্রথম ও দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধ উভয়ই গ্রোজনিকে অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করে, হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এবং শহরটির অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে যায়। জাতিগত রাশিয়ানরাও এই যুদ্ধের কঠোর প্রভাব অনুভব করে।

  • *পুনর্গঠন:**

যুদ্ধের পর, গ্রোজনি পুনর্গঠিত হয়েছে এবং আধুনিক স্থাপত্যের দিক থেকে উল্লেখযোগ্য। অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে, এবং শহরটির অর্থনীতির উন্নয়নের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে, যুদ্ধের স্মৃতি এবং জাতিগত উত্তেজনার ছায়া এখনও বিদ্যমান।

  • *জনসংখ্যা ও ভূগোল:**

২০১০ সালের আদমশুমারি অনুসারে, গ্রোজনির জনসংখ্যা ছিল ২,৭১,৫৭৩। ১৯৮৯ সালে জনসংখ্যা ছিল ৩,৯৯,৬৮৮। শহরটি সুনজা নদীর তীরে অবস্থিত, এবং গ্রেটার ককেশাস পর্বতমালা থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

  • *উল্লেখযোগ্য দিক:**

গ্রোজনি আধুনিক স্থাপত্য, স্পা শহর হিসেবে, এবং চেচেন রাষ্ট্র বিশ্ববিদ্যালয় ও এফসি আখমাত গ্রোজনির আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত।

মূল তথ্যাবলী:

  • গ্রোজনি রাশিয়ার চেচনিয়ার রাজধানী
  • সুনজা নদীর তীরে অবস্থিত
  • ১৮১৮ সালে রুশ দুর্গ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত
  • তেলের আবিষ্কারের ফলে দ্রুত বিকাশ
  • চেচেন যুদ্ধের ফলে ব্যাপক ক্ষতি
  • পুনর্গঠিত ও আধুনিক স্থাপত্য

গণমাধ্যমে - গ্রোজনি

২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

প্লেনটি রাশিয়ার গ্রোজনি শহরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছিল।