গোলাপগঞ্জ উপজেলা, বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের সিলেট জেলার অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক এলাকা। এর নামকরণের ইতিহাস রহস্যে ঘেরা, যদিও কিছু জনশ্রুতি প্রচলিত আছে। একটি জনশ্রুতি অনুযায়ী, ১৫৪০ সালে পাঠান সম্রাট শের শাহের পুত্র ইসলাম শাহ শুরের রাজত্বকালে গোলাব রায় নামে একজন দেওয়ান নিযুক্ত হন, তার নাম অনুসারেই এ এলাকার নামকরণ হয় ‘গোলাবগঞ্জ’, যা পরবর্তীতে ‘গোলাপগঞ্জ’ রূপে পরিচিত হয়। প্রাথমিকভাবে হেতিমগঞ্জে থানা প্রশাসন ছিল, ১৯০৬ সালে ব্রিটিশ সরকার তা গোলাপগঞ্জ বাজারে স্থানান্তর করে। ১৯৮৩ সালে এটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।
গোলাপগঞ্জ উপজেলার অবস্থান ২৪.৮৬° উত্তর অক্ষাংশ ও ৯২.০২° পূর্ব দ্রাঘিমাংশে। এর আয়তন প্রায় ২৭৮.৩৩ বর্গকিলোমিটার। উত্তরে সিলেট সদর, জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট, দক্ষিণে ফেঞ্চুগঞ্জ ও বড়লেখা, পূর্বে বিয়ানীবাজার ও বড়লেখা এবং পশ্চিমে সিলেট সদর উপজেলা অবস্থিত। এখানে ১টি পৌরসভা এবং ১১টি ইউনিয়ন রয়েছে। ১০১টি মৌজা ও ২৮৫টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এ উপজেলায় সুরমা, কুশিয়ারা, ও সোনাই নদী এবং বিভিন্ন বিল উল্লেখযোগ্য।
গোলাপগঞ্জের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। ধান, মরিচ, কুমড়া, কচু প্রভৃতি মূল ফসল। মাছ চাষও উল্লেখযোগ্য। উপজেলায় বিদ্যুৎ, পানীয়জল, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আদি সুবিধা বিদ্যমান। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এই উপজেলাও অংশগ্রহণ করেছিল, যার স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে সুন্দিশাইলে একটি গণকবর এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার আছে। এছাড়াও গোলাপগঞ্জে হযরত বাহাউদ্দিন (র) এর মাজার, শ্রীচৈতন্যদেবের বাড়ি ও মন্দির, কৈলাশটিলা এবং দেওয়ানের পুল উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক স্থান। তবে গোলাপগঞ্জ উপজেলার বিস্তারিত তথ্য প্রদানের জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন। আমরা ভবিষ্যতে আরও তথ্য সমৃদ্ধ উপজেলা সম্পর্কে আপনাদের আপডেট করব।