গুজব: সত্যের আড়ালে মিথ্যাচারের ছায়া
গুজব, একটি শব্দ যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অজান্তেই জড়িয়ে পড়ে। এটি হলো কোনো ঘটনা সম্পর্কে সত্যতা যাচাই না করেই লোকমুখে ছড়িয়ে পড়া ব্যাখ্যা বা কথা। অতীতের ঘটনা নিয়ে ছড়ানো গুজবকে ভূতাপেক্ষ এবং ভবিষ্যৎ ঘটনা নিয়ে ছড়ানো গুজবকে ভবিষ্যাপেক্ষ গুজব বলে। এই মিথ্যা তথ্যের ছড়াছড়ি সামাজিক, রাজনৈতিক, এমনকি ব্যক্তিগত জীবনেও বিভিন্ন ধরণের ক্ষতি করে।
সামাজিক বিজ্ঞানীরা গুজবকে সংজ্ঞায়িত করেন এমন এক বিবৃতি হিসেবে যার সত্যতা কম সময়ে অথবা কখনোই নিশ্চিত করা যায় না। অনেকের মতে, গুজব প্রচারণারই একটি অংশ। সমাজবিজ্ঞান এবং মনোবিজ্ঞানে গুজবের বেশ কিছু ভিন্ন সংজ্ঞা পাওয়া যায়। গুজব প্রায়ই “ভুল তথ্য” এবং “অসঙ্গতিপূর্ণ তথ্য”র সাথে জড়িত। ভুল তথ্য বলতে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য বোঝায়, আর অসঙ্গতিপূর্ণ তথ্য বলতে বোঝায় ইচ্ছাকৃতভাবে ভ্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করা।
রাজনীতিতে গুজব একটি শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নেতিবাচক গুজব ছড়িয়ে তাদের ক্ষতি করা অনেক কার্যকরী বলে প্রমাণিত হয়েছে। গুজবের প্রভাব ব্যাপক এবং দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। এটি পারিবারিক সম্পর্ক, বন্ধুত্ব, ব্যবসায়িক সুযোগ, এবং এমনকি সামাজিক স্থিতিশীলতা কেও ব্যাহত করতে পারে। সুতরাং, গুজবের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সত্যতা যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকের ডিজিটাল যুগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজবের প্রসার আরও বেড়েছে। সুতরাং, তথ্যের যথার্থতা নিশ্চিত না করে কিছু প্রচার না করা এবং সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো অত্যন্ত জরুরী।