ক্রাইস্টচার্চ

ক্রাইস্টচার্চ: নিউজিল্যান্ডের মুক্তা

নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপের পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলে অবস্থিত ক্রাইস্টচার্চ (ইংরেজি: Christchurch, মাওরি: Ōtautahi) দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। অকল্যান্ডের পরে জনসংখ্যার দিক থেকে এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর হলেও, এর সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ, উন্নত অবকাঠামো এবং সমৃদ্ধ ইতিহাসের জন্য এটি বিখ্যাত। উর্বর কৃষি অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ার কারণে ক্রাইস্টচার্চ শস্যদানা উৎপাদন এবং ভেড়াপালনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব:

১৮৪৮ সালের ২৭শে মার্চ চার্চ অব ইংল্যান্ডের সাথে জড়িত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সমিতি ক্যান্টারবারি সংস্থার প্রথম সভায় ক্রাইস্টচার্চ নামকরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ক্রাইস্ট চার্চ কলেজের নাম অনুসারে শহরটির নামকরণ করা হয়। জন রবার্ট গডলে এই নামকরণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ১৮৫৬ সালের ৩১শে জুলাই রাজকীয় সনদের মাধ্যমে ক্রাইস্টচার্চ নগরের মর্যাদা পায় এবং নিউজিল্যান্ডের প্রাচীনতম নগর হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

অর্থনীতি ও শিল্প:

একসময় ক্রাইস্টচার্চের অর্থনীতি মূলত কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে শিল্পায়নের ফলে মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ, চামড়া শিল্প, কাপড়, কার্পেট, পশমের পণ্য, আসবাবপত্র, পরিবহন যন্ত্রাংশ, টায়ার, সাবান, কাচ, এবং ময়দা উৎপাদন শিল্প বিকাশ লাভ করে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, পানি সরবরাহ এবং পানিবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্রাইস্টচার্চের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

শিক্ষা ও সংস্কৃতি:

ক্রাইস্টচার্চ শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। ১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্যান্টারবারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৮৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্যান্টারবারি কৃষি কলেজ (পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে লিঙ্কন বিশ্ববিদ্যালয়) এ শহরের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সমৃদ্ধ করেছে। এছাড়াও, ক্রাইস্টচার্চের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং সৌন্দর্য এটিকে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্থানে পরিণত করেছে।

জনসংখ্যা:

২০১৩ সালের জুন মাসে ক্রাইস্টচার্চের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৩৬৬,০০০। শহরের এলাকা ৩৭৫,৮০০ এর বেশি। এটি সাউথ আইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শহর।

উল্লেখযোগ্য স্থান:

অ্যাভন নদী ক্রাইস্টচার্চ শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়।

মূল তথ্যাবলী:

  • নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর
  • উর্বর কৃষি অঞ্চলে অবস্থিত
  • ১৮৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত
  • ক্যান্টারবারি বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত
  • সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য