কোহিনুর আক্তার

আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭:৪৭ এএম

কোহিনূর আক্তার (সুচন্দা): একজন অসাধারণ অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা

বাংলাদেশী চলচ্চিত্র জগতের এক অসাধারণ অভিনেত্রী ও পরিচালক হলেন কোহিনূর আক্তার, যিনি সুচন্দা নামে বেশি পরিচিত। ১৯৪৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর যশোরের সাতক্ষীরায় জন্মগ্রহণকারী এই মহিলা তার অভিনয় জীবন শুরু করেন ১৯৬০-এর দশকে। তার ছোটো বোন ববিতা এবং চম্পাও ঢাকাই চলচ্চিত্রের দুই জনপ্রিয় অভিনেত্রী। অভিনেতা রিয়াজ তার চাচাতো ভাই।

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা:

কোহিনূর আক্তারের পিতা এএসএম নিজামউদ্দীন আইয়ূব একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন এবং সাহিত্যচর্চাও করতেন। মাতা ডাঃ বেগম জাহান আরা ছিলেন একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক। তিনি যশোর মোমেন গার্লস স্কুল এবং যশোর মাইকেল মধূসূদন কলেজে পড়াশোনা করেন। কিশোরী বয়সে যশোরে নৃত্যশিল্পী হিসেবে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। পিতার চাকরির কারণে পরিবার ঢাকায় চলে আসে এবং তিনি ঢাকা সিটি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। যশোরে থাকাকালীন ‘শকুন্তলা’ নাটকে অভিনয় করে তিনি প্রশংসা অর্জন করেন।

চলচ্চিত্র জীবন:

১৯৬৫ সালে কাজী খালেকের একটি প্রামাণ্যচিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জীবনের সূচনা করেন সুচন্দা। ১৯৬৬ সালে সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘কাগজের নৌকা’ ছবিতে তার চলচ্চিত্র অভিষেক হয়। ১৯৬৭ সালে ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে রাজ্জাকের বিপরীতে অভিনয় করে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘চাওয়া পাওয়া’, ‘নয়নতারা’, ‘সুয়োরানী দুয়োরানী’, ‘যে আগুনে পুড়ি’, ‘কাঁচের স্বর্গ’, ‘অশ্রু দিয়ে লেখা’ ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি ‘টাকা আনা পাই’, ‘প্রতিশোধ’, ‘তিনকন্যা’, ‘বেহুলা লখীন্দর’, ‘বাসনা’ ও ‘প্রেমপ্রীতি’ চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন।

ব্যক্তিগত জীবন:

১৯৬৭ সালে চলচ্চিত্র পরিচালক জহির রায়হানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সুচন্দা। জহির রায়হানের ১৯৭২ সালে মৃত্যুর পর, ১৯৭৬ সালে তিনি ব্যবসায়ী এম রেজাউল মালিককে বিবাহ করেন। তাদের দুই কন্যা রয়েছে। জহির রায়হানের সাথে তার দুই পুত্র আছে, আরাফাত রায়হান (অপু) এবং তপু রায়হান।

পরিচালনা ও পুরস্কার:

‘সবুজ কোট কালো চশমা’ ছিল সুচন্দার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র। ২০০৫ সালে জহির রায়হানের উপন্যাস ‘হাজার বছর ধরে’ অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালক ও প্রযোজক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৯ সালে তাকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করা হয়।

উপসংহার:

কোহিনূর আক্তার (সুচন্দা) বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের এক অমূল্য সম্পদ। একজন অভিনেত্রী, প্রযোজক এবং পরিচালক হিসেবে তার অবদান অতুলনীয়। তার জীবন ও কাজ চলচ্চিত্র প্রেমীদের কাছে সর্বদা স্মরণীয় থাকবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৪৭ সালে যশোরে জন্মগ্রহণ
  • ১৯৬০ এর দশকে অভিনয় জীবন শুরু
  • জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার বিজয়ী (শ্রেষ্ঠ পরিচালক ও আজীবন সম্মাননা)
  • জহির রায়হানের সাথে বিবাহ
  • অনেক জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় ও প্রযোজনা

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - কোহিনুর আক্তার

কোহিনুর আক্তার মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে পরিষ্কার অভিযানের নেতৃত্ব দেন এবং এক রেস্টুরেন্ট মালিককে জরিমানা করেন।