কুয়ালালামপুর: মালয়েশিয়ার রাজধানী ও বৃহত্তম শহর
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দ্রুত বর্ধনশীল মেট্রোপলিটান অঞ্চল কুয়ালালামপুর। ২৪৩ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই শহরটি মালয়েশিয়ার সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু। ১৮৫৭ সালে টিনের খনি থেকে শুরু হওয়া এই শহরের ইতিহাসে যাপ আ লয় ও ফ্রাঙ্ক সুয়েটেনহামের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের অবদান লক্ষণীয়। একসময় নির্বাহী ও বিচার বিভাগের সদর দপ্তর থাকলেও ১৯৯৯ সালে পুত্রজায়ায় স্থানান্তরিত হয়। তবে, রাজনৈতিক সংস্থার কিছু অংশ এখনও কুয়ালালামপুরে অবস্থিত।
ভৌগোলিক অবস্থান:
মালয়েশিয়ার উপদ্বীপীয় অংশের পশ্চিম উপকূলে, সেলেঙ্গর রাজ্যের মধ্যে অবস্থিত কুয়ালালামপুর। গম্বক ও ক্লাং নদীর সঙ্গমস্থলে এই শহরের অবস্থান। টিটিওয়াংসা পর্বতমালা, ক্লাং উপত্যকা ও মালাক্কা প্রণালীর সান্নিধ্যে এর অবস্থান শহরের জলবায়ু ও ভূ-প্রকৃতিকে প্রভাবিত করে।
জনসংখ্যা ও গোষ্ঠীগত বিভাজন:
২০২৪ সালের হিসেবে কুয়ালালামপুরের জনসংখ্যা প্রায় ২০ লক্ষ। এখানে মালয়, চীনা ও ভারতীয়সহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে।
অর্থনীতি ও পর্যটন:
কুয়ালালামপুর মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু। ব্যাংক নেগারা মালয়েশিয়া (মালয়েশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক), বেশ কিছু দূতাবাস এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান এখানে অবস্থিত। বুর্সা মালয়েশিয়া (মালয়েশিয়ার স্টক এক্সচেঞ্জ) শহরের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, বুকিট বিনতাং শপিং জেলা, কুয়ালালামপুর টাওয়ার ইত্যাদি পর্যটন কেন্দ্র বিশ্বজুড়ে খ্যাত। ২০১৯ সালে বিশ্বের ষষ্ঠ সর্বাধিক পরিদর্শিত শহর ছিল কুয়ালালামপুর।
ঐতিহাসিক ঘটনা:
সেলেঙ্গর গৃহযুদ্ধ, ১৯৬৯ সালের জাতিগত দাঙ্গা, মালয়েশিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা (৩১ আগস্ট ১৯৫৭) ইত্যাদি ঐতিহাসিক ঘটনা কুয়ালালামপুরের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
শিক্ষা:
কুয়ালালামপুরে মালয় ইউনিভার্সিটি (UM), ইউনিভার্সিটি টুঙ্কু আবদুল রহমান (UTAR), ইত্যাদি বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য স্থান:
পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, বুকিট বিনতাং, কুয়ালালামপুর টাওয়ার, মেরডেকা স্কোয়ার, জাতীয় প্রাসাদ (ইস্তানা নেগারা), জাতীয় জাদুঘর, ইসলামিক আর্টস মিউজিয়াম, কেএল বার্ড পার্ক, আকোয়ারিয়া কেএলসিসি, জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ, সুলতান আবদুল সামাদ জামেক মসজিদ ইত্যাদি।