কুইন্সল্যান্ড: অস্ট্রেলিয়ার স্বর্গীয় রাজ্য
অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত কুইন্সল্যান্ড দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম ও তৃতীয় জনবহুল রাজ্য। পশ্চিমে উত্তর টেরিটরি, দক্ষিণ-পশ্চিমে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণে নিউ সাউথ ওয়েলস এর সীমানা। কুইন্সল্যান্ডের পূর্ব সীমানা কোরাল সাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত। প্রায় ১,৮৫২,৬৪২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই রাজ্যের জনসংখ্যা প্রায় ৫,২৬৫,০৪৩। রানী ভিক্টোরিয়ার সম্মানে এর নামকরণ করা হয়।
কুইন্সল্যান্ডের ইতিহাস হাজার বছর পুরোনো। খ্রিস্টপূর্ব ৫০,০০০ অব্দে আদিবাসীরা এখানে বসতি স্থাপন করে। ১৬০৬ সালে ডাচ নাবিক উইলিয়াম জ্যানসজুন প্রথম ইউরোপীয় হিসেবে কেপ ইয়র্কের পশ্চিম তীরে অবতরণ করেন। ১৮৫৯ সালের ৬ই জুন রানী ভিক্টোরিয়া কুইন্সল্যান্ডকে নিউ সাউথ ওয়েলস থেকে আলাদা করে একটি স্ব-শাসিত উপনিবেশ হিসেবে ঘোষণা করেন। ব্রিসবেন রাজধানী হিসেবে নির্বাচিত হয়। ১৯০১ সালে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেশনের সাথে যোগ দেয় কুইন্সল্যান্ড।
ভৌগোলিকভাবে কুইন্সল্যান্ড অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। উপকূলীয় অঞ্চলে উষ্ণ আবহাওয়া, গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টিপাত, পশ্চিমে মরুভূমি এবং উত্তরে মৌসুমি বৃষ্টিপাত। বিশাল প্রকৃতির কোরাল রিফ, গাঢ় সবুজ বনাঞ্চল, সুন্দর সৈকত এ রাজ্যকে করে তুলেছে অসাধারণ। অর্থনীতিতে খনন, কৃষিকাজ, পর্যটন, শিক্ষা প্রধান ভূমিকা পালন করে। কৃষিকাজের মধ্যে কলা, আনারস, বাদাম, চিনি, সুতা, আখ উল্লেখযোগ্য। খনিজ সম্পদে কয়লা, সোনা, তামা, রুপা উল্লেখযোগ্য।
পর্যটন কুইন্সল্যান্ডের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ব্রিসবেন, গোল্ড কোস্ট, গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ, পোর্ট ডগলাস, ডেইন্টি রেইনফরেস্ট প্রমুখ স্থান পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। রাগবি লিগ, ক্রিকেট, সাঁতার ইত্যাদি ক্রীড়া কুইন্সল্যান্ডে জনপ্রিয়। ২০৩২ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের আয়োজক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে ব্রিসবেন।
শিক্ষার দিক থেকেও কুইন্সল্যান্ড অগ্রণী। কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় এখানে অবস্থিত।
সংক্ষেপে বলতে গেলে, কুইন্সল্যান্ড প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং উন্নত অর্থনীতির জন্য বিখ্যাত একটি রাজ্য।