কাঠমান্ডু: নেপালের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর
কাঠমান্ডু (নেপালি: काठमाण्डौँ) নেপালের রাজধানী ও সবচেয়ে জনবহুল শহর। প্রায় ৩ মিলিয়ন জনসংখ্যা নিয়ে এটি মধ্য নেপালের কাঠমান্ডু উপত্যকায় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১,৪০০ মিটার (৪,৬০০ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত। ঐতিহাসিকভাবে “নেপাল মন্ডলা” নামে পরিচিত, এটি নেওয়ার সংস্কৃতির আবাসস্থল এবং হিমালয়ের পাদদেশের এক বিশ্বব্যাপী নগর সভ্যতা।
ইতিহাস:
কাঠমান্ডুর ইতিহাস খ্রিস্টপূর্ব ৭ম শতাব্দীতে কিরাতীদের সময় থেকে শুরু। মল্ল রাজবংশের সময় (১২ শতক থেকে) এর উন্নয়ন ব্যাপকভাবে শুরু হয়। কান্তিপুর নামে পরিচিত শহরটি মল্ল যুগে প্রসার লাভ করে। ১৫শ শতকে কাঠমান্ডু, পাটান ও ভক্তপুর তিনটি স্বতন্ত্র রাজ্যে বিভক্ত হয়। ১৭৬৮ সালে গোর্খা রাজ্য কাঠমান্ডু জয় করে এবং শহরটি নেপালের রাজধানী হয়। রানা শাসন (১৮৪৬-১৯৫১) কাঠমান্ডুকে ব্রিটিশপন্থী করে তোলে।
স্থাপত্য ও সংস্কৃতি:
কাঠমান্ডু এর স্থাপত্য হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের সমন্বয়ে গঠিত। দরবার স্কয়ার, স্বয়ম্ভুনাথ, বৌদ্ধনাথ, পশুপতিনাথ প্রমুখ স্থান ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। নেওয়াররা এখানকার আদিবাসী। হিন্দু ও বৌদ্ধ উৎসব এখানে জাঁকজমকের সাথে পালিত হয়। নেপালি, নেওয়ারি, ইংরেজি ইত্যাদি ভাষা এখানে প্রচলিত।
অর্থনীতি:
কাঠমান্ডু নেপালের অর্থনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু। পর্যটন, হস্তশিল্প, শিল্পকর্ম, পোশাক, গালিচা, পশমিনা রফতানি এর প্রধান অর্থনৈতিক কার্যকলাপ। থমেল পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ।
ভূগোল ও জনসংখ্যা:
কাঠমান্ডু উপত্যকা পাহাড়ে ঘেরা। এর জলবায়ু মনসুনভিত্তিক। জনসংখ্যা বৃদ্ধি ব্যাপক। বায়ু দূষণ এখানকার একটি বড় সমস্যা।
উল্লেখযোগ্য ঘটনা:
২০১৫ সালে ৮.১ মাত্রার ভূমিকম্প কাঠমান্ডুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
কাঠমান্ডুতে নেপালের প্রাচীনতম স্কুল দরবার হাই স্কুল এবং প্রাচীনতম কলেজ ত্রিচন্দ্র কলেজ অবস্থিত।