কসবা উপজেলা: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ
বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এলাকা হল কসবা উপজেলা। ২০৯.৭৬ বর্গ কিলোমিটার (৫১,৮৩২.৮ একর) আয়তনের এই উপজেলাটি উত্তরে তিতাস নদী, আখাউড়া ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সীমানায় অবস্থিত। দক্ষিণে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য এবং পশ্চিমে নবীনগর, মুরাদনগর ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সঙ্গে এর সীমানা।
ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ু:
তিতাস, সালদা, বিজনা, সিনাই, সাঙ্গুর, বুড়ি, রাজার খাল, অদের খাল ও কালিয়ারা নদী কসবা উপজেলা দিয়ে অতিক্রম করেছে। পূর্ব প্রান্তে লাল মাটির পাহাড়ী টিলা দেখা যায়। এই উপজেলার জলবায়ু ক্রান্তীয় মৌসুমী, গ্রীষ্ম, বর্ষা ও শীত তিনটি ঋতুই স্পষ্ট। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ৭৮.০৬ ইঞ্চি।
জনসংখ্যা ও শিক্ষা:
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী কসবা উপজেলার জনসংখ্যা ছিল ৩,১৯,২২১ জন। জনসংখ্যার ৯৫.৭% মুসলিম এবং ৪.৩% হিন্দু। গড় সাক্ষরতার হার ৫০.৭%। এখানে ১টি পৌরসভা এবং ১০টি ইউনিয়ন রয়েছে।
অর্থনীতি:
জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ কৃষিকাজে জড়িত। ধান, গম, বিভিন্ন ধরনের সব্জি প্রধান ফসল। কসবা রেল স্টেশনে মহানগর, চট্টলা, উপকূল ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রাবিরতি দেয়। কিন্তু সড়কপথের অবস্থা তেমন ভালো নয়।
ঐতিহাসিক ঘটনা:
মুক্তিযুদ্ধের সময় কসবা উপজেলা গুরুত্বপূর্ণ রণাঙ্গন ছিল। বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযুদ্ধা ও পাকবাহিনীর মধ্যে তীব্র যুদ্ধ সংঘটিত হয়। কসবায় বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক মসজিদ ও মন্দির রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য স্থান:
কসবা বাজার, কুটি বাজার, নয়নপুর বাজার, ব্রাহ্মণগ্রাম, সালদানদী বাজার, মন্দবাগ বাজার, গোপীনাথপুর বাজার, চন্ডীদ্বার বাজার, চারগাছ বাজার, মেহারি বাজার, বল্লভপুর ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য স্থান।
সারসংক্ষেপে:
কসবা উপজেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এলাকা, যার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। কৃষি, যোগাযোগ ও ব্যবসার উপর এর অর্থনীতি নির্ভরশীল। মুক্তিযুদ্ধে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অবদান রাখে।