কম্বোডিয়া (খেমের: កម្ពុជា, আনুষ্ঠানিক নাম: কম্বোডিয়া রাজ্য, খেমের: រាជាណាចក্রកម្ពុជা) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইন্দোচীন উপদ্বীপের একটি দেশ। থাইল্যান্ড, লাওস, ভিয়েতনাম এবং থাইল্যান্ড উপসাগর দ্বারা ঘেরা এই দেশটির আয়তন ১৮১,০৩৫ বর্গকিলোমিটার। কম্বোডিয়ার জলবায়ু গ্রীষ্মমণ্ডলীয় মৌসুমী। টোনলে সাপ হ্রদ ও মেকং নদীর চারপাশে একটি কেন্দ্রীয় সমভূমি দিয়ে গঠিত দেশটি পাহাড়ি অঞ্চল দ্বারা বেষ্টিত। রাজধানী ও বৃহত্তম শহর নমপেন।
কম্বোডিয়ার জনসংখ্যা প্রায় ১.৭ কোটি। সংবিধানে বৌদ্ধধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, ৯৭% এর বেশি লোক বৌদ্ধ ধর্ম অনুসরণ করে। ভিয়েতনামি, চীনা, চাম এবং ৩০ টিরও বেশি পাহাড়ি উপজাতি দেশটির সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী।
কম্বোডিয়ার ইতিহাস প্রাচীন কাল থেকেই রাজতন্ত্রের সাথে জড়িত। এক হাজার বছরেরও বেশি আগে এটি ছিল খেমের জাতির আংকর সাম্রাজ্যের কেন্দ্র। আংকর সাম্রাজ্য ৬০০ বছর ধরে সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে ছিল। ১৮৬৩ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সের অধীনে থাকার পর, কম্বোডিয়া স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৭০ সালে রাজতন্ত্রের পরিবর্তে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৭৫ সালে খমের রুজ নামের সাম্যবাদী সরকার ক্ষমতা দখল করে, গণতন্ত্রী কাম্পুচিয়া নামকরণ করে। খমের রুজের নির্যাতন ও চরমপন্থী সমাজতান্ত্রিক নীতি কম্বোডিয়ার অর্থনীতিতে ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলে। ১৯৭৯ সালে ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়ার খমের রুজ বিরোধী শক্তি খমের রুজ সরকারের পতন ঘটায় এবং একটি নতুন সাম্যবাদী সরকার গঠন করে। ১৯৮৯ সালে সমাজতন্ত্র পরিত্যাগ করে ১৯৯৩ সালে কম্বোডিয়া নতুন সংবিধান গ্রহণ করে রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে।
কম্বোডিয়ার অর্থনীতি কৃষি নির্ভর। মৎস্য ও কৃষিকাজ প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। পর্যটন খাতও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। দেশটির আংকর ওয়াট, টোনলে সাপ হ্রদ এবং মন্দিরসমূহের জন্য বিখ্যাত। অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা ও ধ্বংসাবশেষ পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
কম্বোডিয়া আজো রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো সমস্যার মুখোমুখি। তবে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন অব্যাহত আছে এবং দেশটি বিশ্বের সাথে সম্পর্ক বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে।