কনসার্ট: এক অবিস্মরণীয় সঙ্গীতের অভিজ্ঞতা
সঙ্গীত, মানবজীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আর এই সঙ্গীতের আনন্দকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যায় কনসার্ট। কনসার্ট হলো সরাসরি সঙ্গীত পরিবেশনার এক মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠান, যেখানে দর্শকরা একত্রিত হয়ে তাদের প্রিয় শিল্পীদের সঙ্গীত উপভোগ করতে পারে। একক শিল্পীর রিসাইটাল থেকে শুরু করে বড় বড় ব্যান্ডের জমকালো অনুষ্ঠান, কনসার্টের আয়োজন নানা আকারে হতে পারে।
ইতিহাসের পাতায় ফিরে তাকালে দেখা যায়, কনসার্টের ধারণাটি কিন্তু আধুনিক নয়। ১৭শ শতকের শেষভাগেও গির্জা, অভিজাতদের বাসগৃহ, বা বেসরকারি সাংস্কৃতিক সংস্থার গৃহেই কনসার্টের আয়োজন করা হতো। ১৬৭২ সালে ইংরেজ বেহালাবাদক জন ব্যানিস্টারের আয়োজিত একটি কনসার্টকে সাধারণ জনগণের জন্য প্রবেশমূল্যের বিনিময়ে আয়োজিত কনসার্টের প্রথম নথিবদ্ধ দৃষ্টান্ত বলে মনে করা হয়।
আজকের কনসার্টের চিত্র অনেক বদলে গেছে। বিশাল স্টেডিয়াম থেকে শুরু করে ছোট ছোট কনসার্ট হল, উদ্যান, এমনকি মুক্ত রঙ্গমঞ্চ— যেকোনো জায়গায় কনসার্টের আয়োজন হতে পারে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার কনসার্টের ধ্বনি ও আলোকসজ্জায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পেশাদার সাউন্ড সিস্টেম, আলোকসজ্জা, এবং মঞ্চ সাজসজ্জা কনসার্টকে করে তোলে অবিস্মরণীয়।
একটি সফল কনসার্টের পেছনে অনেক মানুষের কঠোর পরিশ্রম লুকিয়ে থাকে। শিল্পীদের বাদন ও গানের পাশাপাশি সংগঠক, প্রযুক্তিবিদ, সুরক্ষাকর্মী, এমনকি স্বেচ্ছাসেবকদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কনসার্ট আয়োজনে বাণিজ্যিক পেশাদার সফর সংগঠক প্রতিষ্ঠানগুলির ভূমিকাও অপরিসীম। তারা সঙ্গীতশিল্পী, অনুষ্ঠানস্থল, সরঞ্জাম, ইত্যাদির ব্যবস্থা এবং টিকিট বিক্রির মাধ্যমে কনসার্টের আর্থিক দিকটি সম্পাদন করে।
কনসার্ট শুধুমাত্র সঙ্গীতের আনন্দ নয়, এটি একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠান মানুষকে একত্রিত করে, তাদের উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। আর এই কারণেই কনসার্ট সর্বদাই আমাদের মনে স্থান করে নেয়।