মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম: ভারতীয় ক্রিকেটের এক অমূল্য সম্পদ
ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম (মারাঠি: वानखेडे स्टेडियम) ভারতের মুম্বাই শহরের চার্চগেট এলাকায়, মেরিন ড্রাইভের কাছে অবস্থিত একটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ৪৫,০০০ দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এই স্টেডিয়ামটি মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (MCA) মালিকানাধীন এবং মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হোম গ্রাউন্ড। এটি ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসের সাক্ষী, অনেক ঐতিহাসিক ও উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচের আয়োজন করেছে।
স্টেডিয়ামটির ইতিহাস:
১৯৭৪ সালে এস.কে. ওয়াংখেড়ের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়। CCI (Cricket Club of India) এবং MCA-এর মধ্যে টিকিট বণ্টন নিয়ে বিরোধের পর এই স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়। ১৯৭৫ সালে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে এক টেস্ট ম্যাচের মাধ্যমে এর উদ্বোধন হয়। প্রায় ১৩ মাসের নির্মাণকাজের পর এটি সম্পন্ন হয়। শশী প্রভু অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস এর স্থাপত্য এবং বি.ই. বিলিমোরিয়া অ্যান্ড কো ঠিকাদারি কাজ করেছিল।
ঐতিহাসিক মুহূর্ত:
ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে অনেক ঐতিহাসিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ, যেখানে ভারত শ্রীলঙ্কাকে পরাজিত করে বিশ্বকাপ জিতেছিল, এই স্টেডিয়ামেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সাচিন তেন্ডুলকরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনের শেষ ম্যাচও এই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। রবি শাস্ত্রীর একটি ওভারে ছয়টি ছয় মারা এবং বিরাট কোহলীর ২৩৫ রানের ইনিংস ও এই স্টেডিয়ামের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের অংশ।
আধুনিকায়ন:
২০১১ সালের বিশ্বকাপের আগে স্টেডিয়ামটি আধুনিকায়ন করা হয়। দর্শকদের জন্য আরও উন্নত সুযোগ-সুবিধা যেমন বাল্কিটিং, শৌচালয়, এবং খাবারের দোকান স্থাপন করা হয়। সাসপেন্ডেড ক্যান্টিলিভার ছাদ এবং টেফ্লন ফ্যাব্রিক ছাদ এর বিশেষ আকর্ষণ।
বর্তমান অবস্থা:
বর্তমানে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম ভারতের অন্যতম প্রধান ক্রিকেট ভেন্যু। এটি আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া উভয় ধরণের ম্যাচের আয়োজন করে থাকে। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপের জন্য স্টেডিয়ামটির আরও উন্নয়ন কাজ চলছে।
সারসংক্ষেপে:
ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম ভারতীয় ক্রিকেটের ঐতিহ্যের প্রতীক। এটি অনেক ঐতিহাসিক ম্যাচের সাক্ষী রয়েছে এবং এটি বর্তমানেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।