ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি): মুসলিম বিশ্বের একাত্মতা ও সহযোগিতার প্রতীক
১৯৬৯ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর, মরক্কোর রাবাতে ২৫টি মুসলিম দেশের নেতৃত্বে গঠিত হয় ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। প্রাথমিকভাবে ‘ইসলামি সম্মেলন সংস্থা’ নামে পরিচিত এই সংস্থাটি ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধের পর মসজিদুল আকসার ওপর ইসরাইলের আক্রমণের প্রতিবাদে গঠিত হয়। মুসলিম বিশ্বের ঐক্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধি, ইসলামের মূল্যবোধ রক্ষা, এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে মুসলিম দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষা- এ লক্ষ্য নিয়ে ওআইসি কাজ করে আসছে।
ওআইসির সদর দপ্তর সৌদি আরবের জেদ্দায় অবস্থিত। বর্তমানে ৫৭টি দেশ ওআইসির সদস্য, যার মধ্যে ৪৯টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। সংস্থার দাপ্তরিক ভাষা আরবি, ইংরেজি ও ফরাসি। ওআইসির মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন হুসেইন ইব্রাহীম তাহা। জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে ওআইসির স্থায়ী প্রতিনিধি রয়েছে।
ওআইসি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে, যেমন- রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক। তারা মুসলিম বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য কাজ করে, মুসলিমদের অধিকার রক্ষার জন্য প্রচেষ্টা চালায়, গরিব ও অবহেলিতদের জন্য সহায়তা প্রদান করে, এবং ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসারে ভূমিকা পালন করে। ২০১১ সালের ২৮শে জুন কাজাখস্তানের আস্তানায় অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাউন্সিলে সংস্থার নাম পরিবর্তন করে ইসলামি সম্মেলন সংস্থা থেকে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা করা হয়।
ওআইসি মুসলিম বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংস্থা। যদিও তার কার্যক্রম সম্পর্কে সমালোচনাও রয়েছে, তবুও মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা ও ঐক্য বৃদ্ধিতে ওআইসির ভূমিকা অপরিসীম। ভবিষ্যতে, মুসলিম বিশ্বের সমস্যা সমাধানে আরও কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য ওআইসিকে আরও শক্তিশালী হতে হবে।