এটিএন বাংলা: বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি উপগ্রহ চ্যানেলের অভূতপূর্ব যাত্রা
১৯৯৭ সালের ১৫ই জুলাই, বাংলাদেশের টেলিভিশন ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। এটিএন বাংলা, বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি উপগ্রহভিত্তিক বাংলা ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল, তার সম্প্রচার শুরু করে। ঢাকার কাওরান বাজারে অবস্থিত এর স্টুডিও থেকে দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকাসহ বিশ্বের ১৩০ টিরও বেশি দেশে এর সম্প্রচার পৌঁছে। ড. মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত এই চ্যানেল শুধুমাত্র বিনোদন নয়, সংবাদ, চলচ্চিত্র, নাটক, টকশো, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধরণের অনুষ্ঠান সম্প্রচারের মাধ্যমে দর্শকদের মন জয় করেছে।
এটিএন বাংলার যাত্রা শুরু হয় এক অভিনব ধারণার সাথে। ভারতের জিটিভির জনপ্রিয়তা দেখে ড. মাহফুজুর রহমান বাংলাদেশে বেসরকারি উপগ্রহ চ্যানেল গঠনের পরিকল্পনা করেন। প্রথমে ভারতের এটিএন মিউজিক চ্যানেলে এক ঘন্টার সময় ভাড়া নিয়ে বাংলা অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু করেন। পরবর্তীতে থাইকম স্যাটেলাইট কোম্পানির সহযোগিতায় এটিএন বাংলার নিজস্ব সম্প্রচার শুরু হয়। ২০০১ সালে ইউরোপে এবং ২০০৪ সালে আমেরিকায় এর সম্প্রচার বিস্তৃত হয়। ১৬ আগস্ট ২০০১ সালে এটিএন বাংলা সংবাদ সম্প্রচার শুরু করে। নæঈম নিজাম ছিলেন চ্যানেলটির প্রথম নিউজ এডিটর।
এটিএন বাংলার অবদান অসীম। ২০০৪ সালে ‘আমরাও পারি’ নামক একটি তথ্যচিত্রের জন্য ৩২তম আন্তর্জাতিক এমি অ্যাওয়ার্ড জয় করে চ্যানেলটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পায়। এছাড়াও বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করেছে এটিএন বাংলা। ২০১৬ সালে ইউকে-তে দেশীয় পণ্য নিবেশন সংক্রান্ত বিধি লঙ্ঘনের কারণে ব্রিটিশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক অফকম চ্যানেলটিকে তিরস্কার করে।
এটিএন বাংলা বাংলাদেশের টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চ্যানেলটির বিভিন্ন কর্মসূচী দর্শকদের মধ্যে জনপ্রিয় এবং এর অবদান বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও বিনোদনের ক্ষেত্রে অনস্বীকার্য। তবে সম্প্রতি ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট প্রতিবাদীদের হামলায় চ্যানেলটির অফিসে আগুন লাগে এবং তৎকালীন সম্প্রচার বন্ধ হয়। এই ঘটনা বাংলাদেশের মিডিয়া জগতে একটি ধাক্কা সৃষ্টি করেছে।