উড়িষ্যা: ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও আধুনিকতার সমন্বয়
ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত উড়িষ্যা রাজ্য তার সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। প্রাচীন কলিঙ্গ রাজ্যের ধ্বংসাবশেষ থেকে শুরু করে আধুনিক উন্নয়নের ছোঁয়া, উড়িষ্যা সবকিছুতেই অনন্য একটি পরিচয় বয়ে চলেছে।
ভৌগোলিক অবস্থান:
উড়িষ্যা রাজ্য ভারতের পূর্ব তীরে বঙ্গোপসাগরের কিনারে অবস্থিত। উত্তরে ঝাড়খণ্ড, উত্তর-পূর্বে পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং পশ্চিমে ছত্তীসগড় রাজ্য উড়িষ্যার সীমান্ত গঠন করে। উড়িষ্যা তীরবর্তী অঞ্চল বঙ্গোপসাগরের সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক সম্পদের ধারক।
ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার:
উড়িষ্যার ইতিহাস বহু শতাব্দীর পুরনো। প্রাচীন কলিঙ্গ রাজ্য এই অঞ্চলের শক্তিশালী রাজ্য ছিল। মহান চক্রবর্তী অশোক কলিঙ্গ বিজয়ের পর বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করে শান্তিপূর্ণ শাসনের পথ অবলম্বন করেন। পরবর্তীকালে গঙ্গ বংশ, সোমবংশ আদি বিভিন্ন রাজবংশ এই অঞ্চল শাসন করে। মুগল আমলে উড়িষ্যা বাংলার অংশ থাকে। ১৯৩৬ সালে বিহার থেকে পৃথক হয়ে উড়িষ্যা একটি স্বাধীন প্রদেশ হিসেবে গঠিত হয়।
সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য:
উড়িষ্যার সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ। পুরী জগন্নাথ মন্দির বিশ্বের একটি খ্যাতনামা তীর্থস্থান। কোণারকের সূর্য মন্দির সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত স্থাপত্য কীর্তি গুলির মধ্যে একটি। ওড়িশি নৃত্য, সঙ্গীত ও শিল্পকলা উড়িষ্যার সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক উড়িষ্যা রাজ্য বিভিন্ন উৎসব পালনের জন্যে পরিচিত।
অর্থনীতি:
উড়িষ্যার অর্থনীতি কৃষি ও খনিজ সম্পদের উপর নির্ভরশীল। লোহা, ম্যাঙ্গানিজ, বক্সাইট এবং কয়লার ভান্ডার উড়িষ্যার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাম্প্রতিক কালে পর্যটন শিল্প উড়িষ্যার অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি:
সরলা দাস (মহাভারতের ওড়িয়া অনুবাদক), বিজু পট্টনায়ক (উড়িষ্যার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী)
উল্লেখযোগ্য স্থান:
পুরী (জগন্নাথ মন্দির), কোণারক (সূর্য মন্দির), ভুবনেশ্বর (রাজধানী), কটক
উড়িষ্যার অনন্য সৌন্দর্য ও সমৃদ্ধ ঐতিহ্য এই রাজ্যকে ভারতের মানচিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রতিষ্ঠিত করেছে।