উলানবাটর: মঙ্গোলিয়ার রাজধানী ও প্রধান শহর উলানবাটর (মঙ্গোলীয়: Улаанбаатар, "লাল বীর")। তুল নদীর তীরে ১৩৫০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই শহরটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ। ১৬৩৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও বহুবার স্থানান্তরের পর ১৭৭৮ সালে বর্তমান স্থানে স্থায়ী হয়। প্রাথমিকভাবে একটি বৌদ্ধ মঠ হিসেবে এর উন্নয়ন শুরু হয়। ১৯১১ সালে বহির্দেশী মঙ্গোলিয়া স্বাধীনতা লাভের পর "নিসলেল খুরেরে" নামে পরিচিত হয়। ১৯২১ সালে সোভিয়েত লাল বাহিনী ও দামদিনি স্যুবাতার নেতৃত্বে মঙ্গোলীয় বিপ্লবীরা শহরটি দখল করে। ১৯২৪ সালে মঙ্গোলিয়াকে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসাবে ঘোষণা করা হলে শহরের নামকরণ করা হয় উলানবাটর।
সোভিয়েত সাহায্যে নতুন শহর পরিকল্পনা করা হয়, যার কেন্দ্রে স্যুবাতার চত্বর (বর্তমান চেঙ্গিস খান চত্বর)। নব্য-ধ্রুপদী স্থাপত্যশৈলীর সরকারী ভবন, ইতিহাস জাদুঘর ও জাতীয় মঞ্চশালা নির্মিত হয়। ১৯৪২ সালে মঙ্গোলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পেশাজীবী ও কারিগরি উচ্চবিদ্যালয় এবং বিজ্ঞান আকাদেমী প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
উলানবাটর বর্তমানে মঙ্গোলিয়ার প্রধান শিল্পকেন্দ্র। সিমেন্ট, লোহা, ইট, জুতা, বস্ত্র, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানা এখানে অবস্থিত। একটি রেলপথ ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাধ্যমে চীন ও রাশিয়ার সাথে যুক্ত। প্রায় ১৪ লক্ষ লোকের বসবাস। গান্দান ও চৈজিন মঠ সোভিয়েত যুগে ধ্বংস থেকে রক্ষা পায়। উলানবাটরের ঐতিহাসিক স্থাপত্য, জাদুঘর, জাতীয় উদ্যান, বৌদ্ধ মঠ এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসাবে এর গুরুত্ব অপরিসীম। তবে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুদূষণ একটি উদ্বেগজনক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে।