বিশ্বের ইভি বাজারে চীনের জয়যাত্রা এবং এর প্রভাব
বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি) বাজার দ্রুত বিকাশ লাভ করছে। এই বাজারে টেসলার মতো প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি চীনের বিওয়াইডি কোম্পানি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। ২০২৪ সালের ত্রৈমাসিক আয়ে প্রথমবারের মতো টেসলাকে পেছনে ফেলেছে বিওয়াইডি। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে টেসলার চেয়ে ৩ বিলিয়ন ডলার বেশি আয় করেছে বিওয়াইডি। ২০০ বিলিয়ন ইউয়ান (২৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার) আয় করেছে কোম্পানিটি, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেড়েছে।
চীন সরকার বৈদ্যুতিক যানবাহন কেনায় ক্রেতাদের উৎসাহিত করতে বড় ধরনের ভর্তুকি দিচ্ছে। এই ভর্তুকি এবং কর প্রণোদনায় চীনের ক্রেতারা পেট্রলচালিত গাড়ির বদলে বৈদ্যুতিক বা হাইব্রিড গাড়ির দিকে ঝুঁকছেন। বিওয়াইডি তার ৯০ শতাংশ গাড়ি চীনেই বিক্রি করে এবং ফোক্সভাগন এবং টয়োটার ওপর আধিপত্য বিস্তার করছে। বিওয়াইডি এবং অন্যান্য চীনা ইভি প্রস্তুতকারকদের উত্থান পশ্চিমা বাজারে কিছু ঐতিহ্যবাহী গাড়ি নির্মাতাদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। এই প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হয়ে জাপানি প্রতিষ্ঠান হোন্ডা এবং নিসান একীভূত হওয়ার আলোচনা চালাচ্ছে।
চীনা ইভি প্রস্তুতকারকদের উত্থানের ফলে পশ্চিমা দেশগুলো চীনা তৈরিকৃত ইভির ওপর শুল্ক আরোপ করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ পর্যন্ত এবং যুক্তরাষ্ট্র ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। বিওয়াইডি উদীয়মান অর্থনীতিতে তার অবস্থান শক্তিশালী করতে কাজ করছে, তবে ব্রাজিলে শ্রমিকদের ‘দাসপ্রথার মতো’ পরিস্থিতিতে কাজ করার অভিযোগে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়েছে। বিওয়াইডি জানিয়েছে, তারা সংশ্লিষ্ট নির্মাণ প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে এবং ব্রাজিলের আইন পুরোপুরি মানতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
টেসলা, বিওয়াইডি, হোন্ডা, নিসান, ফোক্সভাগন এই প্রতিষ্ঠানগুলো ইভি বাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিভিন্ন দেশের সরকারের নীতিমালা, ভর্তুকি, এবং শুল্ক ইভি বাজারকে প্রভাবিত করছে। বিশ্ববাজারে ইভির বিক্রয় বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে প্রতিযোগিতাও তীব্র হচ্ছে।