আমিনুল ইসলাম (১৯৩১-২০১১): বাংলাদেশের আধুনিক শিল্পের এক অগ্রদূত। তিনি ১৯৩১ সালের ৭ নভেম্বর মেঘনা নদীর তীরে টেটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মাহুতটুলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শুরু করে ১৯৪৮ সালে ঢাকার গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অব আর্ট-এ ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে প্রথম বিভাগে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন এবং ইতালি সরকারের বৃত্তি নিয়ে ফ্লোরেন্সের ‘আকাদেমি দেল বেল্লে আর্তে’ তে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। ১৯৫৬ সালে দেশে ফিরে চারুকলা ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৮৩ সালে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন।
আমিনুল ইসলাম কোন নির্দিষ্ট শৈলী অনুসরণ করেননি। তার শিল্পকর্মে জ্যামিতিক ফর্মের ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্যনীয়। ৫০-এর দশকে তার চিত্রে জ্যামিতিক ফর্মের নতুন এক আঙ্গিক দেখা যায়, যা কিউবিক শিল্পরীতির সূচনা করে। ৬০-এর দশকে বর্ণের প্রাধান্য বেশি। স্বাধীনতার পর তার চিত্রকর্মে তেল রঙ, ভাঙ্গা কাঁচের টুকরো ও হার্ডবোর্ডের সমন্বয়ে কোলাজের উপস্থিতি লক্ষ্যনীয়।
ঢাকার বিভিন্ন স্থানে তিনি দশটির বেশি ম্যুরাল তৈরি করেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, ওসমানী হল, জনতা ব্যাংক উল্লেখযোগ্য। তিনি ১৯৮১ সালে একুশে পদক এবং ১৯৮৮ সালে স্বাধীনতা পুরষ্কার লাভ করেন। ২০১১ সালের ৮ জুলাই তার মৃত্যু হয়। তার অবদান বাংলাদেশের আধুনিক চারুকলার ইতিহাসে স্মরণীয় থাকবে।