আদানি গোষ্ঠী: ভারতের একটি বহুজাতিক ব্যবসায়িক জায়ান্ট
আদানি গোষ্ঠী ভারতের একটি বিশাল বহুজাতিক সংস্থা যা ১৯৮৮ সালে গৌতম আদানি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে একটি পণ্য বাণিজ্য সংস্থা হিসেবে যাত্রা শুরু করে আদানি গোষ্ঠী বর্তমানে শক্তি, সংস্থান, রসদ, কৃষি, আবাসন, আর্থিক সেবা, প্রতিরক্ষা ও মহাকাশসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারিত করেছে। গুজরাটের আহমেদাবাদে অবস্থিত আদানি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড (পূর্বে আদানি এক্সপোর্টস লিমিটেড) এর নেতৃত্বে এই গোষ্ঠী বার্ষিক ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি আয় করে এবং ৫০ টি দেশের ৭০ টি স্থানে কার্যক্রম পরিচালনা করে।
আদানি গোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য সাফল্যের মধ্যে রয়েছে ভারতের বৃহত্তম বন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মুন্দ্রা বন্দরসহ দশটি বন্দর ও টার্মিনালের অধিকার, ভারতের বৃহত্তম ভোজ্য তেলের পণ্য ফরচুন অয়েল-এর সহ-মালিকানা (উইলমার ইন্টারন্যাশনালের সাথে যৌথ উদ্যোগে), এবং ভারতের বৃহত্তম বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদক হিসেবে আদানি পাওয়ারের অবদান। ২০১৪ সালে তিরোদা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৬৬০ মেগাওয়াটের চতুর্থ ইউনিট যোগ এই অর্জনকে আরও সমৃদ্ধ করে। ২০১৫ সালে, দ্য ব্র্যান্ড ট্রাস্ট রিপোর্টে আদানিকে ভারতের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অবকাঠামো ব্র্যান্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
গোষ্ঠীটি ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায় খনি পরিচালনা করে এবং বাংলাদেশ, চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে কয়লা সরবরাহ করে। লজিস্টিকস ও এসইজেড বাহিনীতে আদানি পোর্টস অ্যান্ড এসইজেড লিমিটেড ভারতের বৃহত্তম ড্রেজার বহর গঠন করেছে। ২০১২ সালে, গোষ্ঠীটি ভারতে প্রথম উচ্চ ভোল্টেজের একমুখী বিদ্যুৎ (এইচভিডিসি) ব্যবস্থা স্থাপন করে।
আদানি গোষ্ঠীর বাংলাদেশের সাথেও বিদ্যুৎ রপ্তানির কিছু চুক্তি থাকে যার ফলে বিভিন্ন ধরনের তর্ক ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
তবে, আদানি গোষ্ঠীর দ্রুত উন্নয়ন ও বাজার দখলের সাথে সাথে বিভিন্ন প্রতিকূলতা ও সমালোচনা ও উঠে আসে। বিভিন্ন সূত্র থেকে তাদের ব্যবসায়িক কৌশল, পরিবেশগত প্রভাব, এবং সরকারী সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আদানি গোষ্ঠী একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক শক্তি হিসেবে উঠে আসলেও, তাদের সকল কর্মকাণ্ডের স্বচ্ছতা এবং সাংগঠনিক পরিচালনার ক্ষেত্রে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরী।