"
আইরিন জুবাইদা খান: একজন অনন্য মানবাধিকার কর্মী
আইরিন জুবাইদা খান (জন্ম: ২৪শে ডিসেম্বর ১৯৫৬) একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশী আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী। তিনি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ৭ম মহাসচিব ছিলেন (২০০১-২০০৯), এবং পরবর্তীতে রোমে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ল অর্গানাইজেশন (আইডিএলও)-এর মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন (২০১১-২০১৫)। ২০২০ সালের আগস্টে তিনি মত প্রকাশ ও মতের স্বাধীনতার জন্য জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক হিসেবে নিযুক্ত হন।
তিনি পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস সিলেটের বিরাহিমপুরে। শিক্ষাজীবন শুরু হয় ঢাকার সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গ্রিন হেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে। এরপর ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় এবং হার্ভার্ড ল স্কুলে পড়াশোনা করেন আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার বিষয়ে।
১৯৭৭ সালে তিনি কনসার্ন ইউনিভার্সাল নামক একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেন, এবং ১৯৭৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব জুরিস্টসে যোগদানের মাধ্যমে মানবাধিকার কর্মী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। জাতিসংঘের উচ্চায়ুক্ত শরণার্থী কমিশনে (UNHCR) ২০ বছর কাজ করার পর, ১৯৯৫ সালে তিনি ভারতে UNHCR-এর মিশনের প্রধান নিযুক্ত হন। কসোভো সংকটকালে ম্যাসিডোনিয়ায় UNHCR-এর কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেন। বর্তমানে তিনি ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের সুপারভাইজরি বোর্ডের চেয়ারম্যান।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব হিসেবে কাজের সময় তিনি সংস্থার কার্যক্রমে সংস্কার আনেন, নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক প্রচারণা শুরু করেন এবং গুয়ান্তানামো বে আটক কেন্দ্র সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেন, যা মিডিয়ায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
তিনি ফোর্ড ফাউন্ডেশন ফেলোশিপ, পিলকিংটন ওম্যান অব দি ইয়ার পুরস্কার (২০০২) এবং সিডনি শান্তি পুরস্কার (২০০৬) লাভ করেছেন। ২০০৯ সালে স্যালফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত হন। আইরিন খানের চাচাতো বোন হলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নেতা তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান।
আইরিন খানের জীবন ও কাজ বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবাধিকারের অগ্রগতির জন্য উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। তিনি একজন প্রভাবশালী নারী নেতা, যার কাজ মানবাধিকারের প্রতি বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গিকে বদলে দিয়েছে।
"