আইম্যাক্স: এক উচ্চ-রেজোলিউশন চলচ্চিত্র প্রযুক্তির নাম
আইম্যাক্স হলো উচ্চ-রেজোলিউশন ক্যামেরা, চলচ্চিত্র বিন্যাস, প্রক্ষেপণ যন্ত্র এবং থিয়েটারের একটি সমন্বিত পদ্ধতি। এটি লম্বা দৃষ্টিপাত অনুপাত এবং স্টেডিয়াম আসনবিন্যাসের সাহায্যে বিশাল পর্দায় চলচ্চিত্র প্রদর্শনের জন্য বিখ্যাত। ১৯৬৭ সালের সেপ্টেম্বরে গ্র্যাম ফার্গাসন, রোমান ক্রটর, রবার্ট কার এবং উইলিয়াম সি. শ-এর প্রতিষ্ঠিত মাল্টিস্ক্রিন কোপারেশন লিমিটেড থেকেই আইম্যাক্স কোরপোরেশনের যাত্রা শুরু। ১৯৬০-এর দশকের শেষভাগে এবং ১৯৭০-এর দশকের প্রথম দিকে কানাডায় তারা প্রথম আইম্যাক্স চলচ্চিত্র প্রক্ষেপণ ব্যবস্থা তৈরি করেন।
আইম্যাক্সের বিশেষত্ব হল এর অনন্য প্রজেকশন পদ্ধতি। এটি চলচ্চিত্রকে অনুভূমিকভাবে চালায়, যার ফলে প্রতিবিম্বের প্রস্থ চলচ্চিত্রের প্রস্থের চেয়ে অনেক বড় হয়। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলিতে অসাধারণ দৃশ্যমানতা এবং শ্রবণযোগ্যতা থাকে। ৩৫ মিলিমিটার ও ৭০ মিলিমিটার ফরম্যাটে আইম্যাক্স ফিল্ম রোল পাওয়া যায়, ৭০ মিলিমিটার সংস্করণটি ইমেজিং ফরম্যাটে যুগান্তকারী। এটির ১.৪৩:১ অ্যাসপেক্ট রেশিও ও সমৃদ্ধ কালার প্যালেট আছে। আইম্যাক্স ক্যামেরা সেকেন্ডে ১৫টি ফ্রেম পরিচালনা করতে পারে, তবে বেশি শব্দের জন্য সংলাপ রেকর্ডিংয়ে এটি কম ব্যবহৃত হয়।
ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’ সম্প্রতি আইম্যাক্সের জনপ্রিয়তায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। নোলান ছাড়াও, টম ক্রুজ, জর্ডান পিল প্রমুখ পরিচালকরা আইম্যাক্স ব্যবহার করেছেন। তবে বাংলাদেশে এখনও আইম্যাক্সের উপস্থিতি নেই। দর্শকদের অভিজ্ঞতা উন্নত করার প্রচেষ্টা থাকলেও, বাংলাদেশে আইম্যাক্সের আসল চাহিদা কতটা তা এখনও নিশ্চিত নয়। দেশে আইম্যাক্স চালু করার জন্য কার্যকরী বিপণন প্রয়োজন বলে মনে করেন অনেকে। সাধারণ সিনেমা হলের তুলনায় আইম্যাক্স স্ক্রিনে ২৬ শতাংশ বেশি 'ভিউয়িং স্পেস' থাকে, আর উজ্জ্বলতা বাড়াতে ডুয়াল প্রজেক্টর ব্যবহার করা হয়।
উন্নত প্রযুক্তি হিসেবে আইম্যাক্স বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পেলেও, বাংলাদেশে এর উপস্থিতি নেই। দর্শকদের অনেকেই দেশের বাইরে গিয়ে আইম্যাক্স সিনেমা উপভোগ করেন, যা দেশের অর্থনীতিতে সামান্য প্রভাব ফেলে। আইম্যাক্সের প্রকৃত চাহিদা কতটা, সে বিষয়ে বাংলাদেশে মতভেদ রয়েছে।