আইওএস (iOS) হল অ্যাপল কর্তৃক বিকশিত একটি মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম, যা প্রধানত আইফোন, আইপ্যাড, আইপড টাচ এবং অ্যাপল ওয়াচে ব্যবহৃত হয়। ২০০৭ সালের জানুয়ারী মাসে প্রথম আইফোনের সাথে আইওএসের আত্মপ্রকাশ ঘটে এবং সেই বছরের জুন মাসে বাজারে আইফোন প্রকাশিত হয়। প্রথমে 'আইফোন ওএস' নামে পরিচিত হলেও পরবর্তীতে জুন ২০১০ সালে এর নামকরণ করা হয় আইওএস। এর বার্ষিক আপডেট প্রকাশ করে অ্যাপল। আইওএস ১৮, ২০২৪ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর প্রকাশিত সর্বশেষ সংস্করণ।
আইওএস এর ইউজার ইন্টারফেস স্পর্শ-ভিত্তিক। এতে সহজে ব্যবহারযোগ্য মাল্টি-টাচ অঙ্গভঙ্গি যেমন সোয়াইপ, ট্যাপ, পিঞ্চ ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। হ্যাপটিক ফিডব্যাক ব্যবহারকারীর ইনপুটের তৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রদান করে। অ্যাকসেলেরোমিটার, জাইরোস্কোপ ও প্রক্সিমিটি সেন্সরের মতো অভ্যন্তরীণ হার্ডওয়্যার বিভিন্ন অ্যাপের কার্যকরীতায় সহায়তা করে।
অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে আইওএস অ্যাপ্লিকেশনের সংখ্যা বিপুল। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের হিসেবে এর সংখ্যা ছিল ৩৮ লক্ষের অধিক। এই অ্যাপগুলো ১৩০ বিলিয়ন বারের অধিক ডাউনলোড করা হয়েছে।
আইওএস, ম্যাকওএস-এর উপর ভিত্তি করে তৈরি। এতে ম্যাকওএসের মতো ম্যাক কার্নেল ও ফ্রিবিএসডি-এর উপাদান রয়েছে। আইওএসের কিছু অংশ ওপেন সোর্স লাইসেন্সের অধীনে পাওয়া যায়, তবে এটি মূলত মালিকানাধীন সফ্টওয়্যার।
আইওএস ৪ থেকে মাল্টিটাস্কিং সমর্থন শুরু হয়। এতে ব্যাকগ্রাউন্ডে অ্যাপ্লিকেশন চালানোর সীমিত সুযোগ থাকে। আইওএস ৫ থেকে বিজ্ঞপ্তি কেন্দ্র যুক্ত হয়। সিরি নামের ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট আইওএস-এর গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈশিষ্ট্য।
আইওএস ডিভাইসগুলোর ব্যবহারকারীর সংখ্যা অত্যন্ত বেশি। ২০১৪ সালে ৮০০ মিলিয়ন ডিভাইস বিক্রি হয়েছিল। ২০১৫ সালে এর সংখ্যা ১ বিলিয়ন অতিক্রম করে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারীর মধ্যে ২ বিলিয়ন ডিভাইস এক্টিভেট করা হয়েছিল। আইওএস বিশ্বের দ্বিতীয় সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম। এটি বিভিন্ন ভাষাকে সমর্থন করে। আইওএসে জেলব্রেকিংয়ের মাধ্যমে অনুমোদিত সীমার বহির্ভূত কাজ করা যায়, তবে এটি অ্যাপলের দ্বারা সমর্থিত নয়।