অলঙ্কার শব্দটির বহুবিধ অর্থ রয়েছে। সাধারণ অর্থে এটি গহনা, ভূষণ বা আভরণকে বোঝায়। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বিভিন্ন ধাতু, পাথর, মণি, মুক্তা প্রভৃতি দিয়ে তৈরি এই অলংকার শরীরের বিভিন্ন অংশে পরিধান করা হয়। এর ব্যবহার মানুষের সৌন্দর্য বর্ধন, সামাজিক অবস্থান ও ধন-সম্পদের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন সংস্কৃতি ও জাতির মধ্যে অলংকারের ধরণ ও রীতি ভিন্ন ভিন্ন। প্রাচীন সভ্যতায় পাথর, হাড়, ঝিনুক, কাঠ প্রভৃতি দিয়ে তৈরি অলংকারের ব্যবহার ছিল। ক্রমবিকাশে ধাতুর ব্যবহার, বিশেষ করে সোনা ও রূপার অলংকারের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আধুনিক যুগে কৃত্রিম অলংকারেরও ব্যাপক প্রচলন রয়েছে।
সাহিত্যে ‘অলংকার’ বলতে কাব্যভাষা ও রচনার সৌন্দর্যবর্ধক উপাদানকে বোঝায়। এটি ভাষা প্রয়োগের এক বিশেষ রীতি যা কাব্যকে আরও রসালো, চমৎকার ও মনোহারী করে তোলে। এর অন্তর্গত বিভিন্ন উপাদান যেমন, অনুপ্রাস, রূপক, উপমা, যমক, শ্লেষ ইত্যাদি। প্রাচীন গ্রিক সাহিত্য থেকে উৎপত্তি লাভ করে অলঙ্কার শাস্ত্র। বিভিন্ন ভাষাবিদ ও কবিরা অলংকারের বিভিন্ন সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা হলো ‘যে গুণ দ্বারা ভাষার শক্তি বর্ধন ও সৌন্দর্য সম্পাদন করা হয়, তাকেই অলংকার বলে’। অলংকার দুই প্রকার: শব্দালংকার ও অর্থালংকার। শব্দালংকার শব্দের ধ্বনির মাধ্যমে, আর অর্থালংকার অর্থের মাধ্যমে কাব্যসৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। উদাহরণস্বরূপ, অনুপ্রাস, যমক, শ্লেষ শব্দালংকারের অংশ, আর উপমা, রূপক, উৎপ্রেক্ষা অর্থালংকারের অংশ। বিভিন্ন আলংকারিক যেমন, দণ্ডী, বামন, বিশ্বনাথ কবিরাজ, ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় সহ অনেকেই অলংকার শাস্ত্রের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
অলংকারের উপর আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেলে, আমরা এই নিবন্ধটি আপডেট করবো।