অন্ধ্রপ্রদেশ: ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য
ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যটির একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস, বৈচিত্র্যময় ভূগোল এবং গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ভূমিকা রয়েছে। ১,৬০,২০৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই রাজ্যটি ভারতের সপ্তম বৃহত্তম রাজ্য এবং ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এর জনসংখ্যা প্রায় ৪৯,৩৮৬,৭৯৯। উত্তরে তেলেঙ্গানা ও ছত্তিশগড়, দক্ষিণে তামিলনাড়ু, পূর্বে বঙ্গোপসাগর, পশ্চিমে কর্ণাটক এবং উত্তর-পূর্বে ওড়িশা রাজ্যের সীমানা। ৯৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূলরেখা অন্ধ্রপ্রদেশকে ভারতের দ্বিতীয় দীর্ঘতম উপকূলরেখাধারী রাজ্য করে তুলেছে (গুজরাটের পর)।
ভৌগোলিকভাবে অন্ধ্রপ্রদেশ দুটি অংশে বিভক্ত: উপকূলীয় অন্ধ্র এবং রায়ালসীমা। পূর্বঘাট পর্বতমালা, নাল্লামালা বনাঞ্চল, উপকূলীয় সমভূমি এবং গোদাবরী ও কৃষ্ণা নদীর সমৃদ্ধ ব-দ্বীপ অঞ্চল এই রাজ্যের প্রধান ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য। প্রচুর ধান উৎপাদনের জন্য অন্ধ্রপ্রদেশকে "ভারতের চালের ঝুড়ি" বলা হয়।
ইতিহাস:
অন্ধ্রপ্রদেশের ইতিহাস খ্রিস্টপূর্ব যুগে সাতবাহন রাজাদের শাসনামলে বিস্তৃত। সাতবাহনদের রাজধানী ছিল অমরাবতী। পুরাণে তাদের "অন্ধ্রভৃত্য" নামে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর অন্ধ্র ইক্ষ্বাকু রাজবংশ, পল্লব রাজবংশ, রাষ্ট্রকূট রাজবংশ, বিষ্ণুকুণ্ডী রাজবংশ, পূর্ব চালুক্য রাজবংশ ও চোল রাজবংশ এই অঞ্চল শাসন করে। বিজয়নগর সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবেও অন্ধ্রপ্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। বৈদিক সাহিত্যেও অন্ধ্রপ্রদেশের উল্লেখ পাওয়া যায়।
অর্থনীতি:
অন্ধ্রপ্রদেশ ভারতের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে এই রাজ্য প্রসিদ্ধ। আয়কর প্রদানে দেশের মধ্যে ৬ষ্ঠ সর্বোচ্চ অবদান এই রাজ্যের। শ্রমশক্তি অংশগ্রহণের হারেও এটি ভারতের শীর্ষে রয়েছে। নেল্লোর জেলায় ভারতের প্রধান মহাকাশ উপগ্রহ উৎক্ষেপণ কেন্দ্র অবস্থিত।
সংস্কৃতি:
তেলুগু ভাষা এই রাজ্যের সরকারি ভাষা। তিরুমালা মন্দির সহ এখানে অনেক দ্রষ্টব্য স্থান রয়েছে। এই রাজ্যের সাংস্কৃতিক সম্পদ অপরিসীম।
রাজধানী:
অন্ধ্রপ্রদেশের রাজধানী আমরাভাটি। এটি মূল ভূখণ্ডের বাইরে অবস্থিত, যা একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য। প্রাক্তন রাজধানী ছিল হায়দ্রাবাদ।